এলাকাভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ ইসির
ঢাকা: ভোটকে সামনে রেখে এবার এলাকাভিত্তিক (গ্রাম/মড়ক/মহল্লা) ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিল সংস্থাটি।এর মাধ্যমে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় গুছিয়ে আনা হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল দিয়ে জানুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণ করার পরিকল্পনা চলছে। আর তফসিল দেওয়ার আগেই হাতে রাখতে হবে এলাকাভিত্তিক ও আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা।
সম্প্রতি এক নির্দেশনায় ২ নভেম্বর আসনভিত্তিক চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। এবার দেওয়া হলো এলাকাভিত্তিক। যেই তালিকা ধরেই ভোটার ও প্রার্থীরা ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন।
জানা গেছে, আঞ্চলিক, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানা বা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী।
এতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ৩০০টি সংসদীয় আসনের ছবিসহ ও ছবিছাড়া ভোটার তালিকার হালনাগাদ সিডি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কারিগরি অধিশাখা হতে ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।
ওই সিডি থেকে দেশব্যাপী ৩০০ আসনের সীমানা ও ভোটার এলাকার সীমানা অনুসারে সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসার কর্তৃক তার অধিক্ষেত্রাধীন সংসদীয় আসনসমূহের ৫ সেট ছবিসহ ও ১ সেট ছবিছাড়া ভোটার তালিকা মুদ্রণের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন।
মোট পাঁচ সেট ভোটার তালিকা মুদ্রণের জন্য বলেছে ইসি। রিটার্নিং অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার, ভোটকেন্দ্রের জন্য এক সেট করে চার সেট ও মাস্টার কপিসহ মোট পাঁচ সেট ছবিসহ ভোটার তালিকা মুদ্রণ করা হবে। আর এক সেট মুদ্রণ করা হবে ছবি ছাড়া।
এছাড়া মুদ্রিত ভোটার তালিকার প্রতিটি সেটের ওপরে ভোটার এলাকাভিত্তিক (গ্রাম/সড়ক/মহল্লা ইত্যাদি) তথ্য সম্বলিত একটি কভার পৃষ্ঠা মুদ্রণ করে পুরুষ ও মহিলা ভোটার তালিকা আলাদাভাবে পূর্বের ন্যায় বাঁধাই করা হবে।
এফোর সাইজের অফসেট কাগজে ছাপানো হবে ভোটার তালিকা। প্রতি পাতার (দুই পৃষ্ঠা) জন্য ১০ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন।
তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় ভোটার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তাই এবার ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যা বাড়ছে পাঁচ শতাংশের মতো।
খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে এবার ভোটকেন্দ্র টিকেছে ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ রয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজারের মতো। এতে প্রায় দশ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে কমিশন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে ইসি। ভোটের উপকরণ কেনা প্রায় শেষ। মাঠ পর্যায়ে পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে। শুরু হয়েছে ভোট সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণও।
এদিকে ব্যালট পেপারসহ আনুষঙ্গিক প্রচারপত্র ও ছাপার কাজ সরকারি মুদ্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চলছে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের অ্যাপ তৈরির কাজও।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি শেষ। এখন কেবল তফসিল ঘোষণাই বাকি।