এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পরীক্ষামূলক গাড়ি চলাচল শুরু
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ৯ মাস পর নগরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে গত কয়েকদিন ধরে যান চলাচল শুরু হলেও আপাতত বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গভাবে এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, লালখান বাজার থেকে গাড়ি ওঠার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর পতেঙ্গা থেকে ওঠা গাড়ি নামছে টাইগারপাসে। অন্যদিকে, পতেঙ্গা প্রান্তে গাড়ি ওঠানামা করছে। প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চলাচলের সুযোগ থাকলেও মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারছে না। এসব গাড়ি আসলেও প্রবেশমুখ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে সেখানে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা। এদিকে, গত বছরের ১৪ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি চট্টগ্রাম নগরের ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এক্সপ্রেসওয়ে’ এর উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর থেকে সিডিএ’র নিজস্ব যানবাহন এবং ‘অনুমতি সাপেক্ষে’ কিছু সংখ্যক যান চলাচলের সুযোগ ছিল এ এক্সপ্রেসওয়েতে।
জানতে চাইলে সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলছে। গাড়ি চলাচলে কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি কোনো সমস্যা পাওয়া যায়, তাহলে বিশেষজ্ঞ পরামর্শকদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা নিয়ে কাজ করা হবে।
কবে নাগাদ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি প্রকল্প পরিচালক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে যে গাড়ি চলাচলের উপযোগী হয়েছে, তা মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। গাড়ি চলাচলের বিষয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রয়োজন। টোল প্রদান করে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে হবে। মন্ত্রণালয় যখন অনুমোদন দেবে, তখন পূর্ণাঙ্গভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হবে।
২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। এ সময়ে প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। কিন্তু বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করতে পারেনি সিডিএ। এখন আরেক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করার জন্য আবেদন করেছে সংস্থাটি।