খেলা

ঐতিহাসিক সিরিজ জিততে নতুন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের

কখনোই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট না জেতা বাংলাদেশের সামনে এখন টেস্ট সিরিজ জয়ের হাতছানি। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে টাইগাররা পেয়েছে ১০ উইকেটের অসাধারণ এক জয়। এবার তাদের সামনে সিরিজ জেতার সুযোগ। আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টে ড্র করলেও ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের সুযোগ পাবে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের সামনে বাংলাদেশের জয়ের সুযোগ বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে। মাঠের পরিবর্তন হচ্ছে না। কন্ডিশন তাই অনেকটাই চেনা থাকছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। ঐতিহ্যগতভাবেই রাওয়ালপিন্ডির পিচ পেসারদের সঙ্গ দেয়। তবে টেস্ট ক্রিকেটের অলিখিত নিয়ম মেনেই সিরিজের প্রথম ম্যাচের শেষ দিনে বল হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন স্পিনাররা।

মেহেদি হাসান মিরাজ এবং সাকিব আল হাসানরা দিনের প্রথম দেড় সেশনেই ৭ উইকেট তুলে নিয়ে সহজ করে দেন বাংলাদেশের জয়। অবশ্য সিরিজের সেই ম্যাচে পাকিস্তানের ভুল আর দূর্বলতাও নিশ্চিতভাবেই চোখে পড়েছিল টাইগার খেলোয়াড়দের। নিজেদের দেশে বর্তমানে বিশ্বমানের স্পিনার না থাকায় ৫ম দিনে বাংলাদেশের মিরাজ-সাকিবদের সামনেও দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তানের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ।

ইয়াসির শাহ পরবর্তী সময়ে সেই অর্থে ম্যাচ জেতানোর মতো কোনো স্পিনার পাকিস্তান দলে নেই। নুমান আলী কিংবা সাজিদ খানদের মতো স্পিনাররা থিতু হতে পারেননি দলে। নতুন ভরসা আবরার আহমেদ। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলানোর জন্য যাকে সরিয়ে নিয়েছিল পিসিবি। যদিও এতে কোনো লাভই হয়নি দলের জন্য। বরং পেস বোলারদের স্বাচ্ছন্দ্যেই মোকাবেলা করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

দ্বিতীয় টেস্টের দলে কামরান গুলাম আর আবরার আহমেদকে দলে যুক্ত করলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সুযোগ হবে কি না তা নিয়ে আছে প্রশ্ন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান মহসিন নাকভি যদিও বলেছেন, দল নির্বাচনে কিছুটা ভুল করা হয়েছিল। তবে সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন অধিনায়ক শান মাসুদ এবং সহকারী কোচ আজহার মেহমুদ। তাদের দাবি, দ্বিতীয় টেস্টের পিচ দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আবরার খেলবেন কি না।

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জের নাম তাই আবরার আহমেদ। ৬ টেস্টে ৩৮ উইকেট পেয়েছেন। ম্যাচ উইনার তকমা না পেলেও এখন পর্যন্ত নিজের কাজটা আবরার যে ঠিকঠাক করছেন, সেটার প্রমাণ তার পরিসংখ্যান। ৩১ এর কিছু বেশি রান দিয়েছেন উইকেটের জন্য। ইকোনমি ৩.৬৩।

বলা দরকার, ২০২১ সালের পর থেকে ঘরের মাঠে জেতেনি ম্যান ইন গ্রিনরা। এসময় পেস বোলিং সহায়ক পিচ নিয়মিত তৈরি করেছে দেশটি। তবে তা বোলারদের এনে দেয়নি কোনো সাফল্য। বিগত ৩ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে ১৫০ এর বেশি ওভার বোলিং করার নজির ২১টি। যার মধ্যে পাকিস্তানের মাঠেই এমন ঘটনা ছিল ৬ বার। যার মধ্যে ৩ বার বোলিং করেছেন শাহিন-নাসিমরা।

বল হাতে পাকিস্তানের মাটিতে বোলারদের দুর্দশার চিত্র বোঝাবে আরেকটি পরিসংখ্যান। শেষ তিন বছরে টেস্টে উইকেটপ্রতি পাকিস্তানে বোলারদের খরচ হয়েছে ৪৩ রান। যা বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার তুলনায় পাকিস্তানের পিচে উইকেটপ্রতি ৮ রান বেশি ওঠে।

সিরিজের শেষ টেস্টে তাই ধৈর্যশীল ব্যাটিংটাও ধরে রাখতে হবে বাংলাদেশকে। আর স্পিন সহায়ক উইকেট দেখা গেলে সেখানে দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলামের অন্তভুর্ক্তি ঘটে কি না তাও দেখার প্রশ্ন। তাসকিন আহমেদ এই টেস্টের স্কোয়াডে থাকছেন। তার সংযুক্তিও কার বদলে আর কিভাবে হবে, সেটাও একপ্রকার চ্যালেঞ্জ টাইগারদের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d