কলকাতায় ফের রিমান্ডে কসাই জিহাদ
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদারের (কসাই জিহাদ) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।বুধবার (৫ জুন) জিহাদকে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত আদালতে নেওয়া হয়।
আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) শুভঙ্কর বিশ্বাস তার দুই দিনের পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৭ জুন জিহাদকে আবার আদালতে তোলা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দাদের হাতে গত ২৩ মে বনগাঁও থেকে ধরা পড়েন জিহাদ। ওই রাতেই আনারের দেহাংশ উদ্ধারের জন্য তাকে নিয়ে তল্লাশি চালায় সিআইডি।
২৪ মে তাকে আদালতে তোলা হলে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে রিমান্ডে চায়। সেদিন সরকারি আইনজীবীর কাছে তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ অভিযোগ শুনে ১২ দিনের পুলিশি রিমান্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। এরপর তাকে আজ আদালতে তোলা হলো।
আনারকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগে জিহাদের নামে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়। তাকে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী ৩৬৪, ৩০২, ২০১ ও ১২০বি- এ চার ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটিই জামিন-অযোগ্য ধারা।
এর মধ্যে ৩৬৪- হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ, ৩০২- অপরাধমূলক নরহত্যা, ২০১- তথ্য লোপাট, অর্থাৎ অস্ত্র ও মরদেহ পরিকল্পনা করে সরিয়ে ফেলা, ১২০বি- অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে), অর্থাৎ এ ধরনের মামলায় সর্বোচ্চ রায় হিসেবে বিচারক আমৃত্যু যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন। রাজ্য পুলিশ জিহাদকে একজন ‘দক্ষ কসাই’ হিসেবে বিচারকের সামনে পেশ করেছিল।
নিউটাউনের বিলাসবহুল আবাসন সঞ্জীভা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে যে মাংসপিণ্ড উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো ওই সংসদ সদস্যের কি না, তা জানতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মাংসপিণ্ড উদ্ধার হলেও আজিমের দেহের হাড়় কিংবা মাথার অংশ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি সিআইডি।
তদন্তকারীরা জানান, খুব শিগগিরই ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসবে। পজিটিভ কিছু পাওয়া গেলে সংসদ সদস্যের মেয়ে ও তার ভাইকে ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিংয়ের জন্য কলকাতায় ডাকা হবে। হাড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করা গেলে তদন্তের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে বলে মনে করছে সিআইডি।
এ লক্ষ্যে ভারতীয় নৌসেনা এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৩ জুনও খালে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু তাতেও কিছু মেলেনি।
যদিও ২৮ মে কলকাতা থেকে দেশে ফেরার পথে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছিলেন, যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তাতে অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করতে সমস্যা হবে না।