কসাইয়ের হাতে কসাই খুন, নেপথ্যে সমকামিতা
গত রোববার রাতে উত্তরার দক্ষিণখানে নিজের মাংসের দোকান থেকে খাইরুল নামে এক কসাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খাইরুল হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে বলাৎকার।
এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম নামে আরেক কসাইকে গ্রেপ্তারের পর আজ (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোর্শেদ আলম।
মোর্শেদ বলেন, গত রোববার রাতে দক্ষিণখানের নিজ দোকানে কম্বলে পেঁচানো রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয় কসাই খাইরুলের। তার নাকে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত এবং গলার ডান পাশে তিনটি ক্ষত পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। পরে সন্দেহজনক কয়েকজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজন পাশের দোকানের কসাই শহিদুল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শহিদুল স্বীকার করে যে, সে ফায়দাবাদ আদম আলী মার্কেটে জজ মিয়ার মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করেন। প্রতিদিন মাংস বিক্রি শেষে তার নিজ বাড়ি বেরাইদে চলে যান। কিন্তু ঘটনার দিন বাকিতে বিক্রি করা মাংসের টাকা সংগ্রহের জন্য রাত বেশি হওয়ায় খায়রুল তাকে দোকানে ঘুমাতে বলেন। তার অনুরোধে খাইরুলের সঙ্গে ঘুমাতে যায় শহিদুল।
আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টায় খাইরুল শহিদুলকে বলাৎকারের চেষ্টা করে। এতে শহিদুলের ঘুম ভেঙে যায়। এই ঘটনায় শহিদুল রেগে গিয়ে খাইরুলকে মাংস কাটার চাপাতি দিয়ে কোপ মারে।খাইরুলের মৃত্যু তার মরদেহ কম্বল দিয়ে পেঁচিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান শহিদুল।
খুন হওয়া খাইরুলের বিষয়ে সমকামিতা প্রসঙ্গে আগেও কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে মোর্শেদ আলম বলেন, আমরা মূলত সেদিন গরু দিতে আসা কয়েকজনের কাছে শুনেছিলাম প্রতিদিন যেখানে খাইরুল একা ঘুমায় সেখানে ঘটনার দিন তারা দুজনকে দেখেছিলেন। তাদের তথ্যে আমরা ধারণা করেছিলাম খাইরুলের সঙ্গে ঘুমানো অপর ব্যক্তিই হতে পারে এই ঘটনার মূল আসামি। তবে সেটা যে শহিদুল হবে তা তখনও পরিষ্কার ছিল না। আমরা শহিদুল ও অন্যান্য আরও অনেকের কাছে শুনেছি এই ঘটনার আগে খাইরুলের বিরুদ্ধে এমন (সমকামিতা) অভিযোগ আমরা পাইনি। তারপরও এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না সেটা শহিদুলকে রিমান্ডে নিয়ে আমরা জানার চেষ্টা করব।