কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট খোলা, তবু ধীরে কমছে হ্রদের পানি
কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেটের সব কটি আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) দুই ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি আরও বেড়ে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়। তবে এরপরও খুব বেশি পানি কমেনি কাপ্তাই হ্রদে। যার ফলে হ্রদের তীরবর্তী প্রায় ১৮ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হ্রদের পানি আরও বেড়েছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী অনেক এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বসবাসকারীরা। অনেকের বসতবাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে অনেক এলাকায়। এছাড়া কিছু কিছু বাসিন্দাদের বাসা-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতেও দেখা গেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সীমা ত্রিপুরা, শামসুন নাহার, থুইক্রা মারমাসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, আজ অনেকদিন হলো ঘর থেকে পানি নামছে না। রান্নাঘর ডুবে থাকায় রান্নাবান্না করতে অসুবিধা হচ্ছে। কোনরকম দুটো ভাত রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছি। কাপ্তাই বাঁধের পানি যদি আরো বেশি করে ছেড়ে দিত তাহলে পানি নেমে যেত, আমরাও এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতাম।
আব্দুর রহমান, কালায়ন চাকমাসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পানি কমার কোন লক্ষণ দেখছি না। বরং একটু কমার পর আবার পানি বাড়ে। আজকে কয়েকদিন এই অবস্থা চলছে। অনেকেই ইতিমধ্যে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত হচ্ছেন। দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি চান তারা।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। এবার ৩৯ হাজার পাঁচশ কিউসেক পানি ছাড়া হবে। তবে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে হ্রদে পানি বাড়াতে ধীরে ধীরে পানি কমছে। আশা করা যাচ্ছে, হ্রদের তীরবর্তী বসবাসকারী বাসিন্দাদের দুর্ভোগ শীঘ্রই কমবে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ১০৮.৮২ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। যেখানে বর্তমানে পানি থাকার কথা ৯৮.০৭ এমএসএল। এছাড়া কাপ্তাই বাঁধে সর্বোচ্চ পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বেড়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে ২১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। যা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।