চট্টগ্রাম

কালুরঘাটে ফেরিযুগ, লেগেই আছে দুর্ভোগ

জীর্ণশীর্ণ কালুরঘাট সেতুর বার্ধক্যের সমস্যা সারাতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় তিন মাসের জন্য। কোনো রকমে সারিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার রেলযোগাযোগ চালু করা হলেও গাড়ি চলাচলের উপযোগী হয়নি এখনো। এতে করে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেতুটি। এপার-ওপার যেতে সেতুর বিকল্প হিসেবে দেয়া ফেরিতে কারণে-অকারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। নতুন সেতু নয়, পুরনো সেতুতে উঠে কখন ফেরির দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবে— নিত্যদিন এমন ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে।

১৫ জানুয়ারি, সকাল ৭টায় সরেজমিনে দেখা যায়, ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন কর্ণফুলী নদী। নদীর এপার-ওপার মিলিয়ে গেছে ঘন কুয়াশায়। ঘাটে বাঁধা ফেরি, নেই কোনো নৌকা-মাঝি। বাধ্য হয়ে দুই পাশের রেলিং ছাড়া বিপজ্জনক কালুরঘাট সেতুর উপর হাঁটতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা।

হাসান কুতুব বোয়ালখালীর বাসিন্দা। তিনি নগরের চান্দগাঁও এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাই বাধ্য হয়ে তিনি কর্ণফুলীর নদী দিয়ে পার হন। নিত্যদিনের ভোগান্তির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে কালুরঘাট সেতুর প্রান্তে এসে কষ্টে পড়তে হয়। এখন শীতের সময়। সকালে কুয়াশা থাকে অনেক বেশি। তাই ফেরি চলে না। আবার সকাল সকাল পারাপারের জন্য নৌকাও থাকে না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে সেতুর উপর দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। তবে কুয়াশার কারণে সেতুর উপরেও হাঁটা যায় না। অনেক ভয়ে ভয়ে পার হতে হয়।’

একই কথা ফারুক আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির। তিনি বলেন, ‘বিশেষ প্রয়োজনে নগরের বহদ্দারহাট যেতে হচ্ছে। তবে এখন ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না। ফেরির অপেক্ষায় রয়েছি। কখন আসে জানি না। আবার এদিকে নৌকাও নেই। সকাল-সকাল নৌকা পাওয়া যায় না। আমাদের (বোয়ালখালীবাসী) ভাগ্যটা খারাপ। কত এমপি এলেন, সেতুটা আর হলো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে তো সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলতো। আমরা লাইন পেলে গাড়ি করেই পারাপার হতাম। আর না হয় হেঁটে চলে যেতাম। কিন্তু সেতু বন্ধ। ফেরি করে তো যেমন ইচ্ছে তেমন করে পারাপার হওয়া যাচ্ছে না। ফেরির জন্য অপেক্ষা, আবার ফেরিতে গাড়ি ফিলাপ হওয়ার অপেক্ষা। এসব অপেক্ষা আর ভালো লাগছে না। নতুন সেতুর দরকার নাই, আগে পুরনো সেতুটা ঠিক করে গাড়ি চলতে দিক।’

যাত্রীদের মতো ভোগান্তিতে গাড়িচালকরাও। পিকআপচালক মো. আলম হোসেন বলেন, ‘শহর থেকে ভাড়া নিয়ে বোয়ালখালীর কধুরখীল গিয়েছিলাম। একটা ভাড়া মারতেই সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। যাওয়া-আসাতেই যদি এত সময় চলে যায় তাহলে তো ফেরি দিয়ে ওই এলাকায় চলাচল করা যাবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d