কুল রাখি না শ্যাম রাখি
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সাত চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা একসঙ্গে চালাচ্ছেন অনেক তৃণমূল নেতাকর্মী। তবে প্রার্থীদের নিয়ে নয়, প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার নিয়ে। গত সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পর সাত প্রার্থীর পোস্টার একসঙ্গে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বাবুল বলেন, ‘সব প্রার্থীই আমাদের দলের। একসঙ্গে রাজনীতি করছি। সবাই কাছে পেতে চাইবেন-এটা স্বাভাবিক। তারপরও দল-জনগণের স্বার্থে ও এলাকায় উন্নয়নে দলের ত্যাগী প্রার্থী বেচে নিয়ে কাজ করতে হবে।’
বোয়ালখালীতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী (মোটরসাইকেল), সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা (দোয়াত-কলম), পৌরসভা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম শফি (ঘোড়া), জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য মোহাম্মদ জাহেদুল হক (হেলিকপ্টার), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সেলিম (কাপ-পিরিচ), শ্রমিক লীগ নেতা এস এম নূরুল ইসলাম (টেলিফোন) ও প্রবাসী মোহাম্মদ শফিক (আনারস)। সাত প্রার্থীই আওয়ামী লীগের।
গত দুই দিনে কথা হয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মীর সঙ্গে। তারা বললেন, দলের সাত প্রার্থীকে ঘিরে নেতাকর্মীরা এখনো দ্বিধা-দ্বন্দ্বে। কাকে বাদ দিয়ে কার পক্ষে কাজ করবেন। সবাই তো তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছের লোক।
প্রতীক বরাদ্দের পর সাত প্রার্থী বিরামহীন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে কয়েকজন সিনিয়র নেতা দু-একজন প্রার্থীর সঙ্গে ভোটে প্রকাশ্যে প্রচারে নামলেও দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মী এখনো নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার চেয়ারম্যান-মেম্বার এবং কাউন্সিলররাও প্রার্থীদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছেন।
পটিয়ায় ভোটের আগেই উত্তাপ
পটিয়া চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থিতা করার চেষ্টা করেছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ। নগরের একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠকও করেছিলেন নেতাকর্মীরা। বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। পাঁচ প্রার্থী কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি হননি। ভেস্তে যায় একক প্রার্থিতার চেষ্টা।
তবে বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম ও নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। ভোটের আগে থেকেই গরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ।
তিন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর বদলে গেছে ভোটের মাঠ। এখন ভোটের লড়াইয়ে আছেন সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ (আনারস) ও মো. দিদারুল আলম (দোয়াত-কলম)। দুই প্রার্থীকে ঘিরে দলের সিনিয়র ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন।
আনোয়ারায় দুই মন্ত্রীকে ঘিরে বিভক্ত নেতাকর্মীরা
আনোয়ারায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানকে ঘিরে দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে দুই পক্ষই কৌশলে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। এনিয়ে জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা বেকায়দায় পড়েছেন। তবে দুই গ্রুপের দলাদলির মধ্যে ভালো অবস্থানে রয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী (দোয়াত কলম)। এছাড়াও রয়েছেন অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরী (মোটরসাইকেল) ও কাজী মোজাম্মেল হক (আনারস) প্রতীকে লড়ছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে এবার দলীয় প্রতীক নৌকা দেয়নি আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতাদের প্রার্থিতাকে ঘিরে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে।