জাতীয়

কোন্দল নিরসনে গণভবনে ডাকা হবে তৃণমূলকে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে দলে যেসব কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে প্রথমেই গণভবনে ডাকা হবে তৃণমূলের নেতাদের। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক এর তারিখ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

এরপর সারাদেশে সাংগঠনিক সফর করার জন্য নামবেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের যৌথসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা আমাদের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সভার শুরুতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের। ওই বক্তব্যে তিনি বিএনপির ‘অপরাজনীতি’ ও জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে টিআইবির প্রতিবেদনের জবাব দেন।

পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে কথা বলেন। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ,মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, সাহাবুদ্দিন ফরাজীসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভাসূত্র জানায়, ‘নির্বাচনের পর স্থানীয় পর্যায়ে দলের মধ্যে বিরোধ দানা বেঁধে ওঠেছে। এর জের ধরে কোথাও কোথাও সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় স্বতন্ত্র বনাম নৌকার প্রার্থীর দ্বন্দ্বে হতাহতের বিষয়টিও দলের নেতাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাই দল মনে করে, এটি অনতিবিলম্বে সমাধান করা জরুরি। এরই অংশ হিসেবে দলের ৮ বিভাগে সাংগঠনিক যে টিম আছে, তারা দায়িত্বরত এলাকায় যেন সভা-সমাবেশ করে অভ্যন্তীরণ কোন্দল নিরসন করেন- এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এর আগে তৃণমূলের নেতাদের গণভবনে এনে নেত্রী শেখ হাসিনার মুখোমুখি করার প্রস্তাব আসে দলের বর্ধিত সভায়। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের জানান, তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে তার সম্মতি নিয়ে বর্ধিত সভার তারিখ চূড়ান্ত করবেন।

এ ছাড়া ঢাকা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড কমিটিসহ সারাদেশের যেসব এলাকায় কমিটি বা পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেসব কমিটি প্রদানের বিষয়ে জোর তাগিদ দেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় ঢাকা জেলা ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা দ্রুত কমিটি দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা আমাদের সময়কে জানান, সভায় দলের কোন্দল নিরসনের বিষয়েই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কমিটি প্রদানের বিষয়ে নেত্রী শেখ হাসিনারও নির্দেশ আছে। মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাবনা নিয়েই সভায় কথা হয় এবং বেশকিছু সিদ্ধান্ত আসে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জার্মানি সফর রয়েছে। সেই সফরের আগেই বর্ধিতসভা হতে পারে জানান তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d