গ্যাসের মজুদ বাড়াতে কূপ খনন করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ বাড়াতে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যার সফল বাস্তবায়নে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্বতন্ত্র সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এ দিন প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
নসরুল হামিদ বলেন, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ বাড়াতে সরকার বিভিন্ন মেয়াদে পদক্ষেপ নিয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি বিভিন্ন ধরনের কূপ খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, যার সফল বাস্তবায়নে গড়ে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে ১১টি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে, যার মাধ্যমে দৈনিক ১২৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন নিশ্চিত করা হয়েছে এবং দৈনিক ৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাইসমিক জরিপ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্পাদিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত লিড ও প্রসপেক্ট যাচাই বাছাই করে ২০২৫-২০২৮ সময়ে প্রায় ৮০-১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকার ২৪টি ব্লকে ৩২,০০০ লাইন কিলোমিটার দ্বি-মাত্রিক সাইসমিক জরিপ পরিচালনার চলমান কার্যক্রমের প্রথম ধাপে ইতোমধ্যে ১২,৯৩২ লাইন কিলোমিটার সাইসমিক জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ডাটা প্রসেসিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ৩-৫ বছরের মধ্যে দ্বি-মাত্রিক ও ত্রি-মাত্রিক সাইসমিক জরিপ সম্পন্নের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রকল্প প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে বিভিন্ন ধরনের আরো অধিক কূপ খনন করা সম্ভব হবে। দেশের সমুদ্রাঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও প্রতিযোগিতামূলক করে প্রণীত ‘বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট ২০২৩’ সরকার অনুমোদন করেছে। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ অফশোর বিডিং রাউন্ড, ২০২৪ এর আওতায় গভীর ও অগভীর সমুদ্রের ২৪টি ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য গত ১০ মার্চ, ২০২৪ তারিখ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া স্থলভাগে তেল গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে অনশোর পিএসসি হালনাগাদ করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
গৃহীত পদক্ষেপের সুফল হিসেবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্ণিত ৫০টি কূপের মধ্যে ইতোমধ্যে মোট ১৩টি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে, পাশাপাশি ২টি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্পাদিত খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রমের ফলে মোট গ্যাসের সংস্থান হয়েছে ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। ইতোমধ্যে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক সংযুক্ত গ্যাসের পরিমাণ গড়ে ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
এছাড়া ২০২৫-২৮ সময়ে খনন ও ওয়ার্কওভারের জন্য চিহ্নিত কূপসমূহের প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের মন্ত্রী (প্রধানমন্ত্রীর) অনুমোদন পাওয়া গেছে। অর্থায়নের প্রকৃতি নির্ধারণ সাপেক্ষে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসকল কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম গ্রহণ বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান রয়েছে।