গ্যাস বিদ্যুৎ এলপিজির দাম কমানোর দাবি ক্যাবের
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও এলপিজির দাম ‘যৌক্তিক পর্যায়ে’ কমিয়ে সাধারণ জনসাধারণকে স্বস্তি দিতে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা। এতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব নগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডিন্ট আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম নগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা বলেন, সদ্যপদত্যাগী স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার গুটিকয়েক ব্যবসায়ী নামক লুটেরাদের লুটপাটের সুযোগ দিয়ে গত ১৬ বছর ধরে বিইআরসিকে অকার্যকর করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, এলপিজির দাম প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে ফেলেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিগত সরকারের সে সিদ্ধান্তটি বাতিল করেছেন। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলে দাম অনেক দিন ধরেই নিম্নমুখী হলেও সরকার দাম সমন্বয়ের কথা বলে তা করেনি। তাই জরুরিভাবে বিইআরসির গণশুনানির মাধ্যমে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও এলপিজির দাম যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে এনে সাধারণ জনসাধারণকে স্বস্তি দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাই।
ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকসহ খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়া ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। আর জ্বালানি তেলের দাম কমলে গণপরিবহন ভাড়া কমবে, কৃষি উৎপাদনসহ ব্যবসা বাণিজ্যের অনেকগুলো বিষয়ের খরচ কমবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ওপর। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অঙ্গীকারের অন্যতম হলো মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশ অনেকদিন ধরেই নিম্নমুখী হলেও দেশে গত সরকার তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার অনেক খরচের চাপ বেড়েছে। ২০২২ সালে এক লাফে লিটার ৫১ টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তীতে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও তেমন কোন দাম কমানো হয়নি। সর্বশেষ গত ১ জুন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৭৫ পয়সা করে বড়িয়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৭ টাকা ৭৫ পয়সা, পেট্রোলের দাম ১২৭ টাকা এবং অকটেনে ১৩১ টাকা করা হয়। সরকার বারবার বিপিসির লোকসানের কথা বললেও লোকসান, কেনাকাটায় লুটপাট ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করে পরিকল্পিতভাবে আরও ভারী করেছেন।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় বিপুল সংখ্যাক লোকজন ঘরবাড়ী, সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। যেখানে এক করোনার ক্ষতি এখনো পুষানো যায়নি; সেখানে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষানো আরো অনেক কঠিন হবে। ফলে জনগণের একটি বড় অংশের ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই সংকটকালীন সময়ে সরকার জ্বালানি তেলের ওপর ভ্যাট, ট্যাক্স কমিয়ে জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে জীবন যাত্রায় স্বস্তি দিতে জনগণের পাশে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।