চকরিয়ায় চিংড়ি চাষী কে গুলি করে হত্যা
কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার চিংড়ি জোনে একটি ঘের দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে এক চিংড়ি চাষি নিহত হয়েছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) ভোরে চকরিয়ার চিংড়ি জোনের রামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোহাম্মদ হোসেন (৫৬) মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামের বাসিন্দা এবং রামপুর সমবায় কৃষি উপনিবেশ সমিতির সদস্য ছিলেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় চিংড়ি চাষিরা জানান, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ভোরে রামপুর এলাকার একটি বড় চিংড়ি ঘের দখল করার জন্য ব্যাপক গোলাগুলি করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে চিংড়ি চাষি মোহাম্মদ হোসেন নিহত হন।
তাদের দাবি, সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের প্রতিপক্ষরা এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে।
রামপুর সমবায় কৃষি উপনিবেশ সমিতির পরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘চকরিয়ার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর মৌজায় ৫ হাজার ১১২ একরের বিশাল চিংড়ি ঘের আছে। এর মধ্যে কিছু চিংড়ি ঘেরে সমিতির নিয়ন্ত্রণ নেই। সমিতির নিয়ন্ত্রণে থাকা ঘেরগুলো দখলে নিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে দুই উপজেলা চেয়ারম্যান ও এক পৌর মেয়রের মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল মহড়া দেয়। তারা সমিতির সদস্যদের ঘরে গিয়ে দ্রুত বসতবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেয়। ভয় দেখাতে তারা কয়েকশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।’
‘সন্ত্রাসীদের কথামতো বাড়ি ছেড়ে না যাওয়ায় সমিতির সদস্য মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেছে,’ বলেন তিনি।
নিহতের স্ত্রী রশিদা বেগম বলেন, ‘সমিতির সদস্য হিসেবে আমার স্বামী মোহাম্মদ হোসেন সপরিবারে চিংড়ি ঘেরের পাশেই বসতি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন দীর্ঘ ৭ বছর। তার মতো শতশত সদস্য সপরিবারে এখানে বাস করেন। সংসদ নির্বাচনের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে।’
‘মঙ্গলবার গভীর রাতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য এখানে বসবাসকারী সদস্যদের নির্দেশ দিলেও কেউ যাননি। আজ ভোরে চিংড়ি ঘের দখলে নিতে চাইলে বাধা দিতে যান আমার স্বামী মোহাম্মদ হোসেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে,’ বলেন তিনি।
জানতে চাইলে ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল যায়। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলে জানান তিনি।