খেলাচট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের খেলাধুলা পাঁচবছরে সফল করতে শক্তিশালী সাব কমিটি করবো

চট্টগ্রামের খেলাধুলার প্রাণ সংগঠন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সর্বশেষ নভেম্বরে আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার লম্বা সময় পর নির্বাহী কমিটি দায়িত্ব নিলেও এখনও পর্যন্ত কোন সাব কমিটি বা উপ-কমিটি গঠন করা হয়নি বলে জানা গেছে। সিজেকেএস কেন সাব বা উপ-কমিটি করবে না? এ নিয়ে নির্বাচিত অনেক সদস্যই বিস্ময় প্রকাশ করলেন।

নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য আক্ষেপ মেশানো কন্ঠে বললেন, আমরা নির্বাচিত হয়ে সিজেকেএস-এ এসেছি। কিন্তু জানি না আমাদের করণীয়। দ্রুততম সময়ে নির্বাচিত বিজ্ঞ সদস্যদের দিয়ে সাব কমিটিগুলো গঠন করে পরিকল্পনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারলে ঘরোয়া খেলাধুলা আরও সমৃদ্ধ হতো। জেলা ক্রীড়া সংস্থা কাগজেকলমে প্রতি বছর আয়োজন করে ৩৩টি ইভেন্ট। সবমিলিয়ে সংখ্যাটি ছাড়িয়ে যায় ৩৬ থেকে ৩৯ পর্যন্ত। এরমধ্যে কিছু ইভেন্ট আছে অস্তিত্বহীন।

সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ফ্যাসিলিটিজের অভাবে আমরা কিছু ইভেন্ট নিয়মিত আয়োজন করতে পারছি না। তবে প্রতি মৌসুমে ২২টি ইভেন্ট নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাব কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার আমরা ফলাফল চাই, চট্টগ্রামের খেলাধুলা আগামী পাঁচবছরে যাতে একটি সফল অবস্থানে পৌঁছায় সে জন্য শক্তিশালী সাব কমিটি গঠন করবো। তার কার্যক্রম চলছে। আশা করছি আগামী এক থেকে দু’মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সাব কমিটি পাবে সিজেকেএস। এক্ষেত্রে এবার বিশেষ একটি উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।

একটি কমিটি করা হবে যাদের দায়িত্বই থাকবে বয়সভিত্তিক খেলাধুলা উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দিকে নজর দেয়া। তাঁর পরিকল্পনায় আছে নারী ক্রীড়ার উন্নয়ন নিয়েও। প্রশিক্ষণ মাঠে টার্ফ বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। যাতে একটি অংশ থাকবে শুধু নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য বরাদ্দ। এই পরিসর ধীরে ধীরে আরও বাড়বে। গ্যালারিতে দর্শক ফেরাতে আগামী মৌসুম থেকেই নেয়া হবে কার্যকর উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে করণীয় নিয়ে কাজ করছি।

ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক উন্নতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আ জ ম নাছির উদ্দীন জানান, আউটার স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ দ্রুতলয়ে চলছে, প্রশিক্ষণ মাঠেও টার্ফের ব্যবস্থা হচ্ছে। ক্রীড়া মন্ত্রীর সাথে জিমন্যাশিয়াম ভবনের জায়গায় ১০ তলা মাল্টি কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন চট্টগ্রাম সফরে এসে স্থানটি পরিদর্শনের পর পরবর্তী কার্যক্রম সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাক্রমে দ্রæততম সময়ে আমরা শুরু করবো।

ক্রীড়া পরিদপ্তরের আওতাধীন জেলা ক্রীড়া কার্যালয় চট্টগ্রামের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ কাজল মনে করেন, একটি মাত্র মাঠেই নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করে অনুকরণীয় কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। একাধিক ভেন্যু থাকলে নিশ্চিতভাবেই জেলা আরও সমৃদ্ধ হতো।

এক্ষেত্রে তিনি প্রধানমন্ত্রীর খেলাধুলার উন্নয়নে সদিচ্ছার কথা জানিয়ে বলেন, দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারিভাবে একাডেমি চালু হবে। পুরো কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগলেও একাডেমি চালু হলে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের চিত্রই পাল্টে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই প্রতিটি উপজেলা/ইউনিয়নে অন্তত একটি মাঠের কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। চট্টগ্রাম জেলায় এরই মধ্যে চারটি ভেন্যু প্রস্তুত হয়েছে। অন্যগুলোর কাজও দ্রুততর সাথে এগুচ্ছে।

পদাধিকার বলে সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য হারুন অর রশিদ কাজল চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্বে রয়েছেন ২ বছর। বিভাগের সাথে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ফেনী জেলারও। তিনি মনে করেন, চট্টগ্রামের খেলাধুলায় রয়েছে অমীত সম্ভাবনা। এ অঞ্চলের কিশোর-তরুণরা দারুণ পারদর্শী। রয়েছে দক্ষ সব সংগঠক। তাদের শুধু পরিচর্যার আওতায় আনা গেলে দেশ সমৃদ্ধ হবে। তিনি সিজেকেএস’র প্রতি অনুরোধ করেন, সার্বিক মান-উন্নয়নে খেলোয়াড়দের ডাটাবেজ তৈরি করার।

বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার মতো বিভিন্ন ইভেন্টে স্কুল কলেজের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। ফুটবল হোক কিংবা ক্রিকেট, কিংবা অন্য যে কোন ইভেন্ট, আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ টুর্নামেন্ট নিয়মিত করা এখন সময়ের দাবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d