চট্টগ্রামে কোন দিকে যাবেন স্বতন্ত্ররা
চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতে জয়লাভ করে চমক সৃষ্টি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হন দুই আওয়ামী লীগ ও এক জাতীয়পার্টির প্রার্থী। তাদের কাছে পরাজিত দুই আওয়ামী লীগ প্রার্থী টানা দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে বিজয়ী স্বতন্ত্র এমপিদের আগামীতে ভূমিকা কি হবে- এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। তারা কি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে থাকবেন, নাকি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হবেন- এটিই এখন জানার বিষয় সবার কাছে।
তবে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সরাসরি উত্তর দেন চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। তিনি কেটলি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে এ আসনে বিজয় লাভ করেন। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি) ও জাতীয়পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও পরে কেন্দ্রের নির্দেশে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ আসনে বিজয়ী সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘নেত্রীর সিদ্ধান্তের আলোকে সংসদ সদস্য হয়েছি। এ ক্ষেত্রে তিনি যা সিদ্ধান্ত দেবেন, তা করা হবে। তবে এ মুহূর্তে আমি বলতে চাই, মানুষ আমাকে অনেক আশা নিয়ে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এখন আমার প্রধান কাজ হচ্ছে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা।’
এদিকে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও টানা দুইবারের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব সিআইপি। নির্বাচনে তার প্রতীক ছিল ঈগল। তাকে নিয়েও মানুষের অনেক প্রশ্ন। তিনি কি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে থাকবেন, নাকি নিজের দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হবেন? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এটা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নেত্রী যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবে করা হবে।’
চমক সৃষ্টি করে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনেও জয়লাভ করেছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান সিআইপি। তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন টানা দুইবারের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (নৌকা)। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটনও (ট্রাক)। নির্বাচনের জয়ের পর এ আসনের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান সিআইপি কি স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করবেন, নাকি নিজ দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হবেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দৈনিক পূর্বকোণ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনের আগে নেত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমাকে নির্বাচন করতে বলেছেন, আমি সেভাবে নির্বাচন করেছি। এখন নেত্রীর সাথে দেখা করবো। তিনি যেটা সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবে কাজ করা হবে।’