চট্টগ্রামে বন্যায় কৃষিখাতে ৩৯৪ কোটি টাকার ক্ষতি: কৃষকরা দিশেহারা
সাম্প্রতিক বন্যায় চট্টগ্রামের কৃষিখাতে ৩৯৪ কোটি টাকার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৫টি উপজেলা ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আমন-আউশ ও গ্রীষ্মকালীন সবজির চাষের জমি পুরোপুরি বা আংশিকভাবে প্লাবিত হয়েছে।
ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ অনেক এলাকায় এখনো পানি জমে আছে এবং আউশ-আমনের বীজতলা ডুবে আছে। পানি নামার পর কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে সঠিক তথ্য জানাতে সক্ষম হবেন।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, রোপা আমনের ক্ষতিই সবচেয়ে বেশি। প্রায় ১৩ হাজার ৮৩১ হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বন্যায় প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষকরা আউশ ধান কাটার প্রস্তুতি নিলেও, বন্যায় তাদের সব আশা ভঙ্গ হয়েছে। আউশের সম্পূর্ণ ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ফটিকছড়ি উপজেলায় কৃষিখাতে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৯৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর মীরসরাই, হাটহাজারী, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া এবং সীতাকুণ্ড উপজেলায়ও বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।
নগরীর পাঁচলাইশ এবং ডবলমুরিং এলাকায় আমনের চাষ হলেও, বন্যায় সেখানেও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক কৃষিবিদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, বন্যায় কৃষিখাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে অনেক সময় লাগবে। তিনি আরও জানান যে, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে, কারণ অনেক এলাকায় এখনো পানি জমে আছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, এবারের ক্ষতি পুষিয়ে উঠা তাদের পক্ষে খুব কঠিন হবে। অনেকেই ধারদেনা করে চাষাবাদ করেছিলেন, এখন তাদের চিন্তা বাড়ছে।
এই বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সরকারি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। কৃষকরা সরকারের কাছে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।