চট্টগ্রাম নগর-উপজেলায় নতুন ৪ আবাসিক
নগরী ও উপজেলায় নতুন করে চারটি আবাসিক এলাকা করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই চারটি আবাসিকের মধ্যে দুটি হবে নগরীর পতেঙ্গা এবং চান্দগাঁও ও বাকলিয়া থানাধীন হামিদচর এলাকায়। বাকি দুটি হবে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এবং বঙ্গবন্ধু টানেল সড়কের আনোয়ারা প্রান্তে কালাবিবির দিঘির মোড় এলাকায়। এ চারটি প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় আবাসিকটি হবে আনোয়ারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল প্রান্তে। ১৫৭ একর জায়গায় আনোয়ারার কালাবিবি দিঘি এলাকায় আবাসিক প্রকল্প গড়ার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। আনোয়ারাসহ নগরীর আশপাশের উপজেলাগুলোকে মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভূক্ত করে পরিকল্পিত আবাসিক করার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পাবিদরা।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, নগরীর পতেঙ্গায় ৩৪৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বে-পার্ল হাউজিং’ আবাসিক প্রকল্পের ডিটেইল প্রজেক্ট প্ল্যান (ডিপিপি) সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি প্রকল্পটির ডিপিপি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে প্রেরণও করা হয়েছে। মোট তিনটি পর্যায়ে প্রায় ৬০ একর জায়গায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় সিডিএ। প্রায় ২০ একর জায়গায় প্রথম পর্যায়ের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক কাজী কাদের নেওয়াজ।
একইভাবে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর এলাকায়ও একটি আবাসিকের উদ্যোগ নিয়েছে সিডিএ। সেখানে জায়গা নির্বাচনের জন্য কাজ চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত হয়নি। কিছুদিনের মধ্যে প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ শুরু হবে জানা যায়।
অন্যদিকে নগরীর চাদগাঁও থানাধীন সিডিএ’র রিং রোড় সংলগ্ন হামিদচর এলাকায় ২০ একর জায়গায় আবাসিক করতে সম্ভাব্যতা যাচাই এবং একইসাথে ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ শেষ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ চারটি আবাসিক প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় আবাসিক হবে বঙ্গবন্ধু টানেল সড়কের আনোয়ারা প্রান্তে কালাবিবির দিঘির মোড় এলাকায়। সেখানে প্রায় ১৫৭ একর জায়গায় আবাসিক প্রকল্প গড়ার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। মূলত ওয়ান সিটি টু টাউন কনসেপ্ট থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক নিয়াজ মো. মামুন।
বাংলাদেশ স্থপতি ইন্সটিটিউট চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার কমিটির (বাস্থই) চেয়ারম্যান ও সিডিএ’র বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, আনোয়ারাসহ নগরীর আশপাশের উপজেলাগুলোকে অবশ্যই পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে। উপজেলাকে মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভূক্ত করে পরিকল্পিত আবাসিক করার এখনই উপযুক্ত সময়। নগরীতে যে পরিমাণ লোকসংখ্যা বাড়ছে সেই অনুযায়ী নগর বিস্তৃত করার বিকল্প নেই আমাদের।
জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, পরিকল্পিতভাবে নগরকে বিস্তৃত করার বিকল্প নেই। নগরীর বাইরে আমরা আশপাশের উপজেলাগুলোতেও আবাসিকের পরিকল্পনা করছি। সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে এমন জায়গায় আমরা আবাসিক এলাকা করতে চাই।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০০৮ সালে নগরীর অক্সিজেন ও কুয়াইশের মধ্যবর্তী এলাকায় প্রায় ১৭০০ প্লট নিয়ে অনন্যা আবাসিক এলাকা গড়ে তুলে সিডিএ। এরপর আর কোন আবাসিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি এই সংস্থা। সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ ‘অনন্যা আবাসিক দ্বিতীয় পর্যায়’ একটি প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেন। তবে অর্থ জটিলতায় পরে প্রকল্পটি আর বাস্তবায়ন হয়নি।