চসিকের পদক-কাণ্ডে সিপিবির ক্ষোভ
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আসহাব উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পদক-কাণ্ডে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। পদকের জন্য মনোনীত করে চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তালিকা বাইরে প্রকাশ ও পরিবারকে জানানো সমীচীন হয়নি বলে উল্লেখ করে এ ধরনের আচরণ শুধু অনভিপ্রেত, অসৌজন্যমূলক নয় ধৃষ্টতাপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেছেন বামপন্থী এই রাজনৈতিক দলের নেতারা।
ভাষাসৈনিক আসহাব উদ্দিনের পরিবার সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে কোনো পদক প্রার্থনা করেনি উল্লেখ করে কেন তাঁকে অসম্মান করা হল, কেনই বা তাঁর পরিবারকে বিব্রত করা হলো— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছে প্রশ্নও রেখেছেন তারা।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রতিবছর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, সাহিত্য, সংষ্কৃতি, সাংবাদিকতা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অঙ্গনে অবদান রাখা লোকজনকে একুশে সম্মাননা স্মারক পদক প্রদান করে আসছে। এবারও আমরা পত্রিকার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মনোনীত কয়েকজনের নাম দেখেছিলাম, যাতে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আসহাব উদ্দীনের নামও ছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মনোনীতদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেয়া হয়। কিন্তু ওইদিনই আমরা আবার জানতে পারলাম, আসহাব উদ্দীন আহমেদের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
‘প্রয়াত ভাষাসৈনিক আসহাব উদ্দীন আহমেদের মতো একজন ব্যক্তিত্বকে একবার মনোনীত করে এবং সেটি পত্রপত্রিকায় প্রকাশের পর আবার প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই বিবেকবান মানুষদের ক্ষুব্ধ করেছে। এ নিয়ে অনেকের সংক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যা আমরা অত্যন্ত স্বাভাবিক বলেই মনে করছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পত্রিকায় আমরা আরও দেখেছি সম্মাননা পদকের জন্য মনোনীত করে বিষয়টি সিটি করপোরেশনের একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে অধ্যাপক আসহাব উদ্দীনের পরিবারকে জানানো হয়েছিল। সম্মাননা দেয়ার আগেরদিন মধ্যরাতে আবার পদক প্রত্যাহারের বিষয় তাঁর পরিবারকে জানানো হয়। সিটি করপোরেশনের এ ধরনের আচরণ শুধু অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত ও অসৌজন্যমূলকই নয়, ধৃষ্ঠতাপূর্ণ বলেও আমরা মনে করি। পদকের জন্য কাউকে মনোনীত করা হলেও সেটি যাচাইবাছাই করে একেবারে চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তালিকা প্রকাশ করা সিটি করপোরেশনের উচিত হয়নি, তাঁর পরিবারকেও জানানো কোনোভাবেই সমীচীন হয়নি।
ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ গৌরবোজ্জ্বল সকল অর্জনের বিষয়ে এদেশের মানুষ খুবই সংবেদনশীল। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একজন ভাষাসৈনিকের সঙ্গে যে আচরণ করেছে, সেটা কোনোভাবেই মানুষের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এ ধরনের যে কোনো ঘটনায় সবসময় মানুষের আবেগ-অনুভূতিকে ধারণ করে খুবই গুরুত্ব দিয়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।