চামড়া সংরক্ষণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আড়তদারেরা
পবিত্র ঈদুল আজহার মৌসুমের সেরা চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আড়তদারেরা। পুঁজি সংগ্রহ, এলাকাভিত্তিক বেপারী ঠিক করা, লবণ মজুদ, চামড়ার মাংস ছাড়ানোর অভিজ্ঞ শ্রমিক সংগ্রহ ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
নগরের আতুরার ডিপো এলাকায় বেশিরভাগ চামড়ার আড়ত। এর বাইরে বিভিন্ন এতিমখানা, মাদরাসা নিজস্ব উদ্যোগে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করে। পরে ট্যানারিতে বেচে দেন তারা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ-সভাপতি মো. আবদুল কাদের সর্দার বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের মতো এবারও চামড়া সংরক্ষণের প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। আশার কথা, ২০২২ ও ২০২৩ সালে ট্যানারি মালিকদের কাছে আড়তদারদের বকেয়া নেই বললেই চলে। তবে ২০১৭ সাল থেকে বকেয়ার কারণে অনেক আড়তদার পথে বসে গেছে।
তিনি জানান, এবার সমিতির আড়তদারেরা সাড়ে তিন লাখ চামড়া সংগ্রহ করার প্রস্তুতি রয়েছে। একসময় বৃহত্তর চট্টগ্রামের সব চামড়া আতুরার ডিপো এলেও এখন আসে না। কক্সবাজারের চামড়া সেখানেই লবণ দিয়ে রাখা হয়। লবণ দিয়ে এক মাস পর্যন্ত আমরা চামড়া রাখতে পারি। এরপর আমাদের ভাগ্য ট্যানারি মালিকদের ওপর নির্ভর করে।
চামড়ার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লবণ। ৭৪ কেজির লবণের বস্তা ১ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। দেশে পর্যাপ্ত লবণ উৎপাদন হওয়ায় নজরদারি থাকলে চামড়া সংরক্ষণে লবণ সংকট হবে না বলে মনে করছেন আড়তদারেরা।
একসময় চট্টগ্রামে বেশ কিছু ট্যানারি ছিল। চামড়া নিয়ে কাড়াকাড়ি, মারামারি, মাস্তানিও চলত। সর্বশেষ দুইটি ট্যানারি ছিল- মদিনা ও রিফ লেদার। পরিবেশ ইস্যুতে বন্ধ হয়ে যায় মদিনা ট্যানারি। এখন চালু আছে একটি।
রিফ লেদারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, চামড়ার কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে আমরা দাম নির্ধারণ করি। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা চামড়া সংগ্রহ করবো। আশা করছি ৮০ হাজার থেকে এক লাখ পিস চামড়া কিনবো আমরা।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার মাঠে গত বছর বিপুল পরিমাণ চামড়া লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল৷ জানতে চাইলে গাউছিয়া কমিটির অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, এবারও আমরা মাদ্রাসার এতিমখানার জন্য চামড়া সংগ্রহ করবো। তবে লবণ দিয়ে মাঠে সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেই।
এদিকে দেশের মূল্যবান সম্পদ চামড়া পাচার ও পচনের হাত থেকে রক্ষায় প্রশাসন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সিটি করপোরেশন চামড়া পরিষ্কারের পর বর্জ্য অপসারণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।