ছাগলকাণ্ডে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এ বছর কুরবানির পশুর হাটে ভাইরাল হওয়া অনেক পশুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে ১৫ লাখ টাকার ছাগল। কুরবানি শেষ হলেও থামছে না এই ছাগলকাণ্ড নিয়ে আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো তোলপাড় সেই ছাগলকাণ্ড। এছাড়া ইফাতের আসল পরিচয় নিয়েও জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া মুশফিকুর রহমান (ইফাত) নামের ওই তরুণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানেরই ছেলে। তার একাধিক নিকটাত্মীয় ও জনপ্রতিনিধি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন, ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় সংসারের প্রথম সন্তান।
এদিকে, সাদিক এগ্রো থেকে খাসি কেনেননি বরং তাকে মডেল হিসেবে দেখানো হয়েছে- আলোচিত ইফাতের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সাদিক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেন। শুধু তাই নয়, গরু-খাসি কেনা বাবদ তাকে দেওয়া বায়নার ১১ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করবেন নাকি ফেরত দেবেন- ইফাতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারার কারণে কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারছেন না তিনি।
শেষ মুহূর্তের বিতর্কে গরু-খাসি ও বায়নার টাকা ফেরত নিতে আসবেন না বলেও সাদিক এগ্রোকে জানিয়েছেন ইফাত। ইমরানের এমন দাবির সত্যতাও মিলেছে তাদের মেসেঞ্জার কথোপকথনে।
ব্রিটল জাতের একটি খাসি। যা এবার কুরবানি ঈদে পশু কেনাবেচাকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকানোর পর ১২ লাখ টাকায় তা বিক্রি করা হয় মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে ১৯ বছরের যুবকের কাছে। এরপর ওই যুবকের বাবা এনবিআর কর্মকর্তার পরিচয় সামনে এলে যে সমালোচনা শুরু হয়; তাতে ভোল পাল্টে ফেলেন ইফাত। দাবি করেন, তাকে ছাগলের মডেল বানিয়েছে সাদিক এগ্রো।
তবে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ক্যামেরার সামনে এসে ইফাতের বক্তব্যের পুরো দ্বিমত পোষণ করেন খামারের কর্ণধার ইমরান হোসেন। বলেন, ‘আমি মার্কেটিং পলিসির অংশ হিসেবে তার নাম ব্যবহার করেছি, এটা যৌক্তিক না। হাইপ ক্রিয়েট করে লস করার মতো ব্যবসায়ী আমি না।’
তাদের দুইজনের মেসেঞ্জার কথোপকথন থেকে দেখা গেছে, গেল ৫ তারিখের আগে এক বার্তায় খাসির পুরো টাকার ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে সাদিক এগ্রোর কর্ণধার ইমরান হোসেনকে জানায় মুশফিকুর রহমান ইফাত। এছাড়া সামারাই নামে অন্য খামার থেকে কিনে সাদিক এগ্রোতে রাখা একটি গরুর দাম খাসির দামের সঙ্গে সমন্বয় করতে অনুরোধ করা হয় ওই মেসেঞ্জার বার্তায়।
গত ৭ জুন রাত ১টা ২৯ মিনিটে চ্যাটিংয়ে আরও পরিষ্কার হয়, খাসির দাম মিটেছে ১২ লাখ টাকা। আর সামারাই থেকে কেনা ওই গরুর দাম বাবদ ৬ বা ৭ লাখ টাকা বিয়োগ করে বাকি টাকা পরিশোধ করার কথা জানায় ইফাত।
৯ জুন আগের এক চ্যাটিংয়ে মোট দাম ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করে ১১ তারিখের আগে সাদিক এগ্রো থেকে খাসি ও গরু নিয়ে আসবেন বলে জানান ইফাত।
এরপর বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে ইফাত জানিয়ে দেন, গরু-ছাগল এমনকি বায়না করতে দেওয়া ১১ লাখ টাকা; কোনো কিছুই লাগবে না তার; উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে শুধু মুক্তি চান তিনি।
এমন অবস্থায় ইমরান হোসেন বলেন, ইফাত আর পরবর্তীতে আসেননি। আমরাও আর খাসি বিক্রি করতে পারিনি। আমরা ইফাতের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না। সে কি টাকা ফেরত নিবে, নাকি আমরা বাজেয়াপ্ত করে ফেলব- কিছুই বুঝতে পারছি না।
ওই কথোপকথনে দেখা যাচ্ছে, নিজের ব্যবসা হিসেবে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ক্রিপ্টোকারেন্সির ট্রেডিংকে দেখিয়েছে ইফাত।