ছোলা আমদানি স্বাভাবিক হলেও বাজার অস্থির
রমজানের ইফতারে বেশ জনপ্রিয় ছোলা। এর বাইরে নাশতা হিসেবে বছরজুড়ে চাহিদা থাকে ছোলার। চট্টগ্রামের মেজবানে ছোলার ডালের রয়েছে আলাদা কদর। স্বাভাবিকভাই রমজানের আগেই জমজমাট হয়ে ওঠে ছোলার বাজার। এবার রমজানের দুই মাস আগেই অস্থির ছোলার বাজার।
অভিজাত মুদির দোকান বা সুপারশপে সীমিত পরিমাণে পাকিস্তানি কাবলি ছোলা বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে এখনো খাতুনগঞ্জের বাজারে মিয়ানমারের ছোলা আসেনি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের বছরের অবিক্রীত ছোলা এবং নতুন আমদানি করা ছোলা মিলে সংকট হবে না রমজানে।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। খাতুনগঞ্জের ডাল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সঞ্জয় দেব খোকন জানালেন, রমজানে ছোলার চাহিদা বেশি থাকে। আজ অস্ট্রেলিয়ার ছোলা মানভেদে ৯৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে। ছোলার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। ভারতের ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। ইউক্রেন রাশিয়ার সাদা মটর বিক্রি হচ্ছে ৬৭ টাকা।
তিনি বলেন, রমজান সামনে রেখে আমদানিকারকরা ছোলা আমদানি করেছেন। একসময় শুধু খাতুনগঞ্জে ছোলার আমদানিকারক ছিলেন। এখন সারা দেশে ছোলার আমদানিকারক আছেন। বুকিং রেট, জাহাজ ভাড়া, এলসি কস্ট, অন্যান্য খরচ মিলে যার যার সুবিধামতো ছোলা বিক্রি করছেন।
মেসার্স তৈয়বিয়া ট্রেডার্সে কথা বলে জানা গেছে, এক মাস আগে ভালোমানের ছোলা ছিল ৮৫ টাকা, মাঝারি মানের ছোলা ৭৭ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ভালো মানেরটা ৯০ টাকা, মাঝারি মানেরটা ৮৪ টাকা। এখন ভালো মানের ছোলা ৯৪ টাকা, মাঝারি মানের ৮৭ টাকা। তবে বেচাকেনা নেই।
নগরের বিভিন্ন মুদির দোকানে খুচরায় ভালো মানের অস্ট্রেলিয়ান ছোলা ১০০-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মুদির দোকানে। এ ছাড়া পুরোনো ছোলা ৮৫-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, আমদানিকারক, বড় পাইকার, ছোট পাইকার, মুদি দোকানি যত হাতবদল ততই দাম বাড়ছে। তবে খুচরায় সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ে। তাই সমন্বিত নজরদারি দরকার। একই সঙ্গে টিসিবিকে শক্তিশালী করে ছোলাসহ রমজানের অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে হবে।
চট্টগ্রামের বড় খাদ্যশস্য আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় ছোলার হারভেস্টিং মৌসুম হচ্ছে অক্টোবর-নভেম্বরে। ৭৪০ ডলারে যে ছোলা বুকিং দিয়েছি তার পড়তা পড়ছে ৯০-৯২ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমদানিকারকরা কেজিতে এক টাকা লাভ পেলেই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের এলসি বিবেচনা, জাহাজভাড়া, খালাস, পরিবহন মিলে একেকজন আমদানিকারকের পড়তা একেক রকম।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা খাদ্যশস্যের ছাড়পত্র দিয়ে থাকে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। এ কেন্দ্রের প্রধান উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বাংলানিউজকে জানান, গত ১ জুলাই থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার ২২৭ টন ছোলা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছোলা খালাস হয়েছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৮২৫ টন।