জন্মনিয়ন্ত্রণে শহরের চেয়ে গ্রামের নারীরা এগিয়ে
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের নারীরা এগিয়ে আছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ (এসভিআরএস) এক জরিপের তথ্যমতে গ্রামের নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন শহরের চেয়ে ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
আবার দেশে আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে এগিয়ে আছেন নারীরা। তারমধ্যে মুখে খাওয়া বড়ি গ্রহণের হারই বেশি। নারীদের মধ্যে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীরাই বেশি আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেন। সর্বাধিক ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে মুখে খাওয়ার বড়ি গ্রহণ করেন।
এসভিআরএস জরিপে দেখা যায়, শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণের মাত্রা ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। যে পদ্ধতিটি গ্রামাঞ্চলে ৬৪ দশমিক ৯ শতাংশ নারী গ্রহণ করেন এবং শহরাঞ্চলে গ্রহণ করে ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। এছাড়া বর্তমানে বিবাহিত নারীদের মধ্যে ৬১ দশমিক ০ শতাংশ নারী আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। এর বিপরীতে মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ নারী সনাতন পদ্ধতি গ্রহণ করছেন।
নগরীর একাধিক নারীর সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, খাবার বড়ির গ্রহণে সুবিধা বেশি। সহজলভ্য, শারীরিভাবে কোনো অসুস্থতাবোধ হয় না। আবার চাইলেই যখন ইচ্ছে ওষুধ বন্ধ করা যায়। দামেও কম। ইনজেশন বা অন্য পদ্ধতিগুলো শারীরিকভাবে নানা জটিলতা দেখা দেয়। আবার কষ্টসাধ্য বলেও অনেকে উল্লেখ করেন।
জরিপে দেখা যায়, নারীদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে খাওয়ার বড়ি। দ্বিতীয় পছন্দে রয়েছে ইনজেকশন। ইনজেকশন গ্রহণকারীর অনুপাত ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন নম্বর পছন্দের তালিকায় রয়েছে কনডম। যা ৬ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ ব্যবহার করেন। সব ধরনের পদ্ধতির মধ্যে মাত্র ০ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ কপার টি গ্রহণ করেন। এছাড়া ২ শতাংশ নারী বন্ধ্যাত্বকরণ অন্যান্যসহ অন্যান্য পদ্ধতি গ্রহণ করেন।
চট্টগ্রাম জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেন। এরমধ্যে অল্প বয়সীরা আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বেশি গ্রহণ করে। করোনা পরবর্তী সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উপকরণ কিছুটা কমলেও এখন আবার বেড়েছে। তবে বিতরণ কার্যক্রম শহরের চেয়ে উপজেলা পর্যায়ে বেশি। কারণ শহরের নাগরিকরা এখন সচেতন। তারা ফ্রি উপকরণের ওপর নির্ভর করে না। তাই প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় বিতরণ কার্যক্রম বেশি।