জাতীয়

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সংশোধনেরও ক্ষমতা পেলেন ডিসি-ইউএনও

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের পুরোপুরি ক্ষমতা দেওয়া হলো জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)। এর ফলে জন্মসাল সংশোধনেরও সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। এর আগে জন্মসনদের ক্ষেত্রে জন্মসালের মাস ও দিন সংশোধনের এখতিয়ার ছিল তাঁদের। সাল সংশোধনের প্রয়োজন হলে ভুলের সপক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আবেদন করতে হতো ঢাকায় রেজিস্ট্রার জেনারেলের (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন) বরাবর।

১৮ জানুয়ারি এক অফিস আদেশে ডিসি ও ইউএনওর হাতে সনদ সংশোধনের পুরোপুরি ক্ষমতা দেওয়া হয়। নতুন রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. যাহিদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন, ২০০৪–এর ১৫ ধারা অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সনদের তথ্য সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য ডিসি ও ইউএনওরা ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সনদ প্রদানের ৯০ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে এরূপ ক্ষেত্রে আবেদন করা যাবে। তবে আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী ডিসির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।

রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সংশোধনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৪৫টি। গত কয়েক মাসে এ আবেদনগুলো জমেছে। শুধু জন্মসাল সংশোধনের জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে আবেদন জমা পড়েছিল ৩৯ হাজার ২২৯টি। এই অফিস আদেশ জারির সঙ্গে সঙ্গে জন্মসাল আবেদনগুলো এলাকা অনুসারে ডিসি ও ইউএনওর কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নতুন আদেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. যাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুযায়ী ডিসি ও ইউএনওদের হাতে সনদ সংশোধনের দায়িত্ব রয়েছে। সেটাই দেওয়া হয়েছে। যাতে সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যায় এবং সংশোধনের জন্য কাউকে অন্য এলাকা থেকে ঢাকায় আসতে না হয়। এ কারণে জন্মসাল সংশোধনের আবেদনগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সনদ দেওয়ার ৯০ দিন পার হলে আবেদন করা যাবে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে যাঁরা পুরোনো জন্মবছরে ‘ভুল’ সংশোধন করতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা হবে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, শিক্ষা সনদের সঙ্গে জন্মসনদের মিল নেই এমন অনেকের রয়েছে। তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের উপস্থাপিত তথ্যে নিবন্ধক সন্তুষ্ট হলে সংশোধন করবেন। তা না হলে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপিলের সুযোগ তো থাকছেই। তবে বিদেশ থেকে আসা সংশোধনের আবেদন আগের মতোই রেজিস্ট্রার জেনারেলের বরাবরে করতে হবে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, সংশোধনের জন্য বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করতে হয়। আর ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভার বাসিন্দাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করতে হয়। আর নামের বানানসহ ছোটখাটো ভুল সংশোধনের ক্ষমতা স্থানীয় নিবন্ধক কার্যালয় যেমন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের হাতে রয়েছে।
সংশোধনের মোট আবেদনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংশোধনের জন্য জমা রয়েছে ২ হাজার ৯৭২টি। ইউএনওর কার্যালয়ে জমা রয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৮৯০টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d