জবিতে অভিনেত্রী শায়লাকে নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ক্যাম্পাসে ছোট পর্দার অভিনেত্রী শায়লা সাথীকে নিপীড়নের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেদী হাসান সৈকত নামের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিনেত্রী শায়লা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নাট্যকলা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরের সামনে দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সৈকত এ নিপিড়ন করেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
নিপিড়নের একটি ভিডিও হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, অভিনেত্রী শায়লা সাথী বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সুন্দর মুহূর্তে নিজের ভিডিও করার সময় মেহেদী হাসান সৈকত পেছন থেকে তাকে স্পর্শ করেন।
এ বিষয়ে অভিনেত্রী শায়লা সাথী বলেন, ‘এই ছেলেটি অনেক দিন ধরে আমাকে জ্বালাতন করছিল। মেসেঞ্জারে বাজে বাজে অকথ্য ভাষায় মেসেজ দিত। কিন্তু আমি পাত্তা দিতাম না। আজ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমি শান্ত চত্বরে সুন্দর মুহূর্তকে ধারণ করতে নিজের ভিডিও করছিলাম। এসময় মেহেদী হাসান সৈকত নামে ওই ছেলেটি আমার পেছন থেকে স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন। এরপর আমি ভয় পেয়ে আমার পাশে থাকা ব্যাচমেট বন্ধু বিলাস দাসকে জানালে তাকেও মারধর করে সৈকত। ’
সাথী আরও বলেন, ‘আমি অভিনয়শিল্পী। ক্যাম্পাসে আমার ফ্যান-ফলোয়াররা দাঁড়ানো ছিল। এসময় আমাকে স্পর্শ করেছে। আমি শকট হয়ে গেছি। কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ এমন করতে পারে না। এই ক্যাম্পাসে আমি নিরাপদ কি না জানি না। এ ঘটনায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই। ’
এদিকে ওই ছাত্রীর নিপিড়ন ঠেকাতে গিয়ে মারধরের শিকার নাট্যকলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিলাস দাস বলেন, ‘আমার ব্যাচমেট বান্ধবী নিজের ছবি ও ভিডিও করছিল। এসময় মেহেদী হাসান সৈকত তার স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে। এসময় আমার বান্ধবী আমাকে ভয় পেয়ে বিষয়টি জানালে সৈকত আমার গায়ে হাত তোলে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। ’
নিপিড়নের অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সৈকত সহকারী প্রক্টরের সামনে বলেন, ‘আমি ওই মেয়েকে পছন্দ করি। কিন্তু সে আমার ডাকে সাড়া দেয় না। ’
এরপর সৈকত ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিতেও রাজি হন। পরে সৈকতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা লিখিত বক্তব্য পেয়েছি। সিসি ক্যামেরা দেখা হবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সৈকতকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম বলেন, জবি ছাত্রীকে নিপিড়নের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রকে থানায় আটক আছে। তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাল কোর্টে পাঠানো হবে।