জমিতে জায়গা হয়নি, ঘরেই দাফন বৃদ্ধার
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় জায়গা না পেয়ে জবেদা খাতুন (৭০) নামে এক বৃদ্ধাকে নিজের ঘরের মেঝেতেই দাফন করা হয়েছে। বাড়ির অংশীদারদের সঙ্গে জমিজমা বিরোধকে কেন্দ্র করে ওই বৃদ্ধার সন্তানরা মায়ের মরদেহ ঘরেই দাফন করেন
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পশ্চিম জয়নগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে আজিমদ্দি সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা আ. রশিদ ও খোরশেদ আলম আপন দুই ভাই থাকেন আলাদা ঘরে। তাদের দুজনের মধ্যে ৫ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। জমির মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এদিকে দেড় বছর আগে মারা যান আ. রশিদ। জমির বিরোধ থাকায় তার দাফন করা নিয়েও সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব। অবশেষে ঘরের পাশে কবর দেওয়া হয় রশিদকে। এ বিরোধ জড়ায় রশিদ ও খোরশেদ আলমের ছেলেদের মধ্য।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যান রশিদের স্ত্রী। জমির বিরোধ থাকায় কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি খোরশেদের ছেলেরা। তাই বাধ্য হয়ে ঘরেই মধ্যেই বৃহস্পতিবার তাকে দাফন করা হয়।
সামান্য একটু জমির জন্য দাফনের জায়গা হয়নি অসহায় পরিবারটি। যা খুবই দুঃখজনক। অপর দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
বৃদ্ধার ছেলে মো. রফিজল বলেন, এলাকার মানুষ এতো করে বললো তারপরেও ভাই মায়ের কবরের জন্য একটু জায়গা দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ঘরের মধ্যেই মাকে দাফন করেছি। আমার তো আর কোনো জায়গা নেই।
মেয়ে লাইলি বেগম বলেন, এমন নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন তারা। সারারাত মায়ের মরদেহ পড়েছিল তারা কেউ এগিয়ে আসেনি।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা তাদের অনুরোধ করেছি কিন্তু কথা শোনেনি। তারা ঘরের মধ্যেই মরদেহ দাফন করেছে। চাচাতো ভাইদের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ ছিল না। স্থানীয় লোকজন সবাই জানে।
এমন নির্মম ঘটনা শুনে পরিদর্শনে আসেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. বাচ্চু। তানি বলেন, আমি নিজ খরচে লাশ দাফনের জন্য তাদের বলে এসেছি। প্রয়োজনে মসজিদের পাশে দাফন করা হবে।
এ ব্যাপারে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যরঞ্জন খাসকেল বলেন, এ ঘটনা নিয়ে কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।