‘জমি লিখে না দেওয়ায়’ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জমি লিখে না দেওয়ায় অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী মো. আবু তৈয়বকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান এ রায় দেন।
দণ্ডিত মো. আবু তৈয়ব চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়নের জাফরাবাদ এলাকার টুনু মিয়ার ছেলে। আর খুনের শিকার তার স্ত্রী শাহীন আক্তার একই উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের নুরুল আলমের মেয়ে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে শাহীন আক্তারের সঙ্গে আবু তৈয়বের বিয়ে হয়। এটি তার (শাহীন) দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। আগের সংসারে শাহীনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। আবু তৈয়ব প্রবাসী ছিলেন। ২০১৪ সালের আবু তৈয়ব দেশে ফিরে বেকার হয়ে পড়েন। শাহীনের প্রথম সংসারের দুই ছেলে বিদেশে ছিলেন। আর তাদের পাঠানো টাকায় শাহীন বৈলতলীতে বাবার বাড়ির অদূরে নিজের নামে জমি কিনে একতলা পাকাঘর তৈরি করেন। স্ত্রীর নামে জমি কেনায় আবু তৈয়ব ক্ষুব্ধ হন। তিনি বারবার জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য শাহীনকে চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধের জেরে ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি শাহীন আক্তারকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আবু তৈয়ব। ওই সময় ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন শাহীন আক্তার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা নুরুল আলম বাদী হয়ে আবু তৈয়বকে আসামি করে চন্দনাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল আবু তৈয়বের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত।
জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। দুই মেয়ে রিমু আক্তার ও রেশমি আক্তার বাবা আবু তৈয়বের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষী দেন। ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহীন আক্তারকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আবু তৈয়বকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই রায়ে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে আসামি আবু তৈয়ব কারাগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তাকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। পরে তাকে সাজামূলে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত রায়ে উল্লিখিত মৃত্যুদণ্ডের নথি সাতদিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।