জাহাজ সরানো হল জেটি থেকে, পণ্য খালাস বন্ধ চট্টগ্রাম বন্দরে
ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’র সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নিজস্ব ‘অ্যালার্ট ৩’ জারিসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধসহ বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে এ নিয়ে বন্দর ভবনে কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা সকালে সবাইকে নিয়ে একটি সভা করেছি। সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যাতে বন্দর চ্যানেল, জাহাজ, হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট, কার্গো ও কনটেইনারের ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের নিজস্ব সতর্কতা সংকেত ‘অ্যালার্ট- ৩’ জারি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দর জেটিতে ২২টি জাহাজ অবস্থান করছিল। সবগুলোকে গভীরে সাগরে নিরাপদে অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু জাহাজ চলে গেছে। আর কিছু জাহাজ জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করছে। তারাও চলে যাবে।’
সচিব জানান, বন্দরের মেরিন ডিপার্টমেন্ট নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশের সহায়তায় বন্দর চ্যানেল ও জেটি থেকে ছোট বড় সব জাহাজ বহির্নোঙরে কিংবা শাহ আমানত সেতুর পূর্বপাশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বন্দরের নিজস্ব ছোট জাহাজ-নৌযানগুলো জেটিতে বাঁধা হচ্ছে। কি গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি), রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি)’সহ সব কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট পর্যায়ক্রমে প্যাকিং করা হচ্ছে।
খালি কনটেইনারগুলো নিচে বা নিরাপদে রাখা হচ্ছে। বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জেটি, টার্মিনাল ও ইয়ার্ডে পূর্বনির্ধারিত ডেলিভারি কার্যক্রম চলছে। পাইলটের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ কনট্রোল রুমে খোলা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) আবহাওয়ার ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড় হামুন’র গতিপথের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হামুন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থারত ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ঘূর্ণিঝড় হামুন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিম এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
হামুন এগিয়ে আসার কারণে পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।