জিয়ার স্মরণে অনুষ্ঠান, কে শুনে কার কথা!
দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিট। এর আগেই, মঞ্চের আসন পরিপূর্ণ অতিথিদের আগমনে। খানিক বাদে বাদেই স্থানীয় নেতাদের নামে স্লোগান তুলতে তুলতে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে না পেরে সিনিয়র নেতারা বারবার কর্মীদের থামার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছিলেন। তবে কে শুনে কার কথা! দলের মহাসচিবের কাছে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে একের পর এক শোডাউন-মিছিল নিয়ে প্রবেশ করছে বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম ‘শাহাদাতবার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এমন হযবরল অবস্থা দেখা গেছে। নগরের ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম মিলনায়তনে ‘চট্টগ্রাম ফোরাম’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ সেমিনার ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
স্টেজে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন অতিথিরা। তবে তাঁদের বক্তব্যের মাঝখানেই স্লোগান নিয়ে আসা আগত কর্মীদের মাইক হাতে বারবার বারণ করছিলেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। তারা বারবার বলছেন— ‘আপনারা স্লোগান বন্ধ রাখুন। এটা কোনো দলীয় সভা নয়। এটা শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, সেমিনার। সবাইকে ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। স্লোগান বন্ধ করতে হবে। আজকে কারো নামে স্লোগান হবে না।’
কিন্তু বক্তব্যের মাঝে অন্য মাইকের আসা আওয়াজে কে কী বলছিলেন তা বুঝতে পারছিলেন না কেউ! ওই অনুষ্ঠানে থাকা আগতরাও বার বার উঁকিঝুঁকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলেন, কোথা থেকে কে কী বক্তব্য দিচ্ছেন। কে কোন ওয়ার্ডের হয়ে স্লোগান-মিছিল নিয়ে আসছেন।
ঘটেছে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কি
স্লোগান দিতে বারণ করার পরও কর্মীরা ব্যানার নিয়ে এসে সেমিনারস্থলে টানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
অসুস্থ ফখরুলের কথাও কানে নেননি নেতাকর্মীরা
বিকেল ৫টা ২১ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম ঘোষণা করেন সঞ্চালক। এরপর আবারও স্লোগান দেওয়া শুরু করেন নেতাকর্মীরা। এ সময়ও বার বার স্লোগান না দিতে অনুরোধ জানিয়েও কোনো ফায়দা হয়নি। পরে খোদ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্লোগান দিতে বারণ করেন। তাঁর কথাও কর্নপাত করেননি কেউ। শেষমেশ তিনি বলেন, ‘স্লোগান দিবেন না, আমি খুব অসুস্থ। আপনারা স্লোগান দিলে আমি কথা বলতে পারবো না। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্লোগান দিবেন না।’ পরে ধীরে ধীরে স্লোগান দেওয়া বন্ধ হয়।