চট্টগ্রাম

টাকা উড়ছে বোয়ালখালীতে!

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে টাকা উড়েছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে। পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে কর্মী-সমর্থকরা প্রার্থীর হয়ে টাকা বিলিয়েছেন ঘরে ঘরে। নির্বাচনের আগের দিনগত ‘চাঁদরাতে’ও টাকা বিলি হয়েছে। ওই রাতে খোদ চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদুল হক ‘খুশি’ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি)! এমন একটি অভিযোগ তুলেছে বিরোধীপক্ষ।

তাদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ২০ লাখ টাকা এবং ওসিকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছে। যদিও বা দুজনেই এই অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন।

জানতে চাইলে ইউএনও ইমরান হোসাইন সজীব এবং ওসি আছহাব উদ্দিন বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে আমাদের ঢাল বানানো হচ্ছে।

জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারের শেষের দিকে এসে পছন্দের প্রার্থী জাহেদুল হকের পক্ষে জয় ছিনিয়ে নিতে ঘরে ঘরে গিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আল নোমানের নেতাকর্মীরা। টাকা দিয়েছেন ভোটারের হাতে হাতে। এমন কি নোমান নিজেও গণসংযোগ করে প্রকাশ্যে টাকা বিলিয়েছেন। সম্প্রতি টাকা বিতরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নোমান উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘ইউএনও এবং ওসিকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে যদি যৌক্তিক কোনো প্রমাণ না থাকে তাহলে এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

তবে টাকা বিতরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কাউকে টাকা পয়সা দেওয়া নির্বাচনীবিধি লঙ্ঘন। যদি এমন কোনো অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে জানানো হয় এবং কর্তৃপক্ষ যদি যথাযথ প্রমাণ পান তাহলে মুহূর্তেই ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে।’

প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণের বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মইনুল হক বলেছেন, ‘টাকা বিতরণের ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কিছু কর্মী সমর্থককে প্রচার-প্রচারণা এবং টাকা বিলি করতে দেখা গেছে। এটা অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন।’

আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শফিক বলেন, ‘এখানে টাকার খেলা চলছে। একটি কেন্দ্রে হেলিকপ্টার প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আমার কর্মীদের বের করে দিয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাহেদুল হক বলেন, ‘ভোটে জেতা না জেতা আল্লাহর ফয়সালা। সেটা আমি বলতে পারবো না।’

ইউএনও-ওসিকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আই লাভ ইউর কোয়েশ্চন। এক্সিলেন্ট… আসলেই… আসলেই… আসলেই…।’ এরপর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

এদিকে রবিবার (২৬ মে) জাহেদুল হকের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ পরিবারের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার আপন দুই ভাই মো. নেছারুল হক ও মো. ছায়েদুল হক।

তারা বলেন, জাহেদুল হক হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি আমাদের মরহুম বাবার আদর্শ ও আদেশ অমান্য করে আমাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক ভোগদখল করে রেখেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d