চট্টগ্রাম

টানেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে রাত ৩টা থেকে অপেক্ষা, টোল দিলেন মুন্সিগঞ্জের জুয়েল

মুন্সিগঞ্জের জুয়েল রানার ইচ্ছা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে যাবেন।তাই আরও কয়েকজন বন্ধু নিয়ে বের হয়ে পড়েন তিনি।গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার সময় তাঁরা চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্তে পৌঁছে যান। এরপর আজ রোববার সকাল ছয়টার সময় প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি টোল দেন।

জুয়েল রানা বলেন, ‘টানেল এলাকায় এসে অপেক্ষা করার সময় আরও গাড়ি এসে অপেক্ষা করে। তখন মনে হচ্ছিল, প্রথমে টোল দিতে পারব না। তবে ভালো লাগছে প্রথম টোল দিতে পেরেছি বলে।’

ওই গাড়ির চালক মো. শাহেদ বলেন, ‘সারা জীবন গাড়ি চালালাম সেতু আর ফেরি পার হয়ে। এবার নদীর নিচ দিয়ে যাব, খুব উত্তেজনা কাজ করছে।’ শুধু জুয়েল রানা ও শাহেদ নন, প্রথম টানেলে প্রবেশ করে অনেকেই আনন্দিত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল টানেল উদ্বোধন করলেও যান চলাচল শুরু হয় আজ সকাল ছয়টা থেকে। টানেল পাড়ি দিতে দুই প্রান্তে যানবাহন নিয়ে জড়ো হন অনেকে।

আনোয়ারা প্রান্তে জুয়েল রানার পর টোল দেন সাতকানিয়ার চালক শফিক আলম। তিনি মো. জাকারিয়া নামের যাত্রীকে নিয়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। শফিক আলম বলেন, ‘এত তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাচ্ছি, আশ্চর্যের বিষয়!’

এদিকে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে সকাল ছয়টার দিকে টানেলে প্রবেশ করেন দুলাল সিকদার, তাঁর স্ত্রী সালমা আক্তার ও সন্তানেরা। সালমা আক্তার বলেন, ‘টোল বক্স আনোয়ারায় হওয়ায় আগে টোল দিতে না পারলেও আগে টানেলে প্রবেশ করেছি। তাই ভালো লেগেছে।’

প্রথম যাত্রীবাহী বাস হিসেবে টোল দেয় বিডি বাস লাভার গ্রুপের একটি বাস। তাঁরা বাসটি ফুল ও কাপড় দিয়ে সাজিয়ে নিয়ে টানেলে প্রবেশ করেন। এই গ্রুপের একজন সদস্য জুনায়েদুল হক বলেন, ‘আমরা রাত ১২টা থেকে পতেঙ্গা প্রান্তে অপেক্ষা করি। সকাল ছয়টার সময় টানেল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে ঢুকি।’

নিজে গাড়ি চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরী থেকে আনোয়ারায় যাচ্ছিলেন আনিতা মুবাশ্বিরা। তিনি বলেন, ‘অনেক অপেক্ষা করেছি টানেল চালুর জন্য। তাই টানেল পার হওয়ার সময় নিজেকে নিয়ে গর্ব হচ্ছিল বাংলাদেশি হিসেবে। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টানেল আমাদেরই।’

পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারার দিকে নিজে গাড়ি চালিয়ে পার হন আনিতা মুবাশ্বিরা। সকাল সোয়া ছয়টার দিকে টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে
পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারার দিকে নিজে গাড়ি চালিয়ে পার হন আনিতা মুবাশ্বিরা। সকাল সোয়া ছয়টার দিকে টানেলের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা সকাল ছয়টার সময় যান চলাচলের জন্য টানেল খুলে দিয়েছি। এখন থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা টানেল চালু থাকবে। তবে গভীর রাতে যান চলাচল কমে গেলে টোলের লেন কমিয়ে আনা হবে। তবে কোনো যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হবে না।’ টানেলে ৬০ কিলোমিটার গতি রাখার নির্দেশনা আছে এবং টানেলের ভেতর যেন যানবাহন না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থাপনা আছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d