টেকনাফে প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল
প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে ফের কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল।দুদলে বিভক্ত হয়ে ১৮০ রোহিঙ্গার সঙ্গে আলোচনা করছেন তারা। মূলত প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের সম্মতি আদায়ে এই আলোচনা চলছে।যার মধ্যে একটি দল বিজিবির নদী নিবাস রেস্ট হাউস এবং অপর দলটি গণপূর্ত বিভাগের রেস্ট হাউসে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগের ৩৪ সদস্যের এই প্রতিনিধি দল রাখাইন স্টেটের মংডু টাউনশিপ থেকে স্পিড বোটে করে টেকনাফের ট্রানজিট ঘাটে এসে পৌঁছায়।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটের ইমিগ্রেশন বিভাগের এই প্রতিনিধি দলে সে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা রয়েছে।
মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আরও জানান, প্রত্যাবাসনের জন্য পাইলট প্রকল্পের অধীনে ২ হাজার ৮০ জন রোহিঙ্গার তালিকা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০০ পরিবার প্রধানের সঙ্গে মিয়ানমারের এই প্রতিনিধি দল কথা বলবেন। সকাল থেকে প্রতিনিধি দল টেকনাফ সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউস মিলনায়তনে এই পরিবার প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছেন।
প্রতিনিধি দল রাখাইন স্টেটে সে দেশের সরকার কর্তৃক ইতিপূর্বে প্রত্যাবাসনের জন্য যে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং মডেল ভিলেজ নির্মাণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছে তার একটি ভিডিও চিত্র রোহিঙ্গাদের দেখাবেন।
আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে প্রত্যাবাসনের জন্য কথা বলতে মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দল টেকনাফে আসে। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় প্রতিনিধিদলের সফর। এর আগে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধি দল দুই দফা টেকনাফে এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন। মিয়ানমারে নিজেদের বসতভিটা দেখতে মে মাসে রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাখাইন স্টেট পরিদর্শন করেছেন।
রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমার থেকে ফিরে স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বর মাসে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণকাজ চলছে।
এর আগে গত ১৫ মার্চ ও ২৫ মে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল দুই দফায় বাংলাদেশে আসে। ওই সময় প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই-বাছাই করে দলটি মিয়ানমারে ফিরে যায়। এছাড়া রাখাইনে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ দেখার জন্য গত ৫ মে বাংলাদেশ সরকার ও রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল রাখাইন সফর করে।