‘তাহিয়্যাতুল অজু’র নামাজ গুনাহ মুছে দেয়
সাক্ষাতে অভিবাদন জানানো ইসলামের সৌন্দর্য। মুমিনরা একে-অন্যকে সালাম-মুসাফাহার মাধ্যমে অভিবাদন জানায়।
অনুরূপ আমলের মাধ্যমেও কিছু বিষয়কে অভিবাদন জানানো হয়। মসজিদে প্রবেশ করে ‘তাহিয়্যাতুল অজু’র দুই রাকাত নামাজ আদায় মসজিদকে অভিবাদন জানানোর মাধ্যম।
আবার তাওয়াফের মাধ্যমে পবিত্র কাবাঘরকে অভিবাদন জানানো হয়। এরকম অনেক অভিবাদন রয়েছে।
‘তাহিয়্যাতুল অজু’র নামাজ কী
পবিত্রতার জন্য আমরা অজু করি। এই অজুরও অভিবাদন-পদ্ধতি রয়েছে।
প্রিয়নবী (সা.) আমাদের তা শিখিয়েছেন। এটি রাসুল (সা.) সুন্নত। তাহিয়্যাতুল অজু বা অজুর অভিবাদন হলো দুই রাকাত নামাজ। এ নামাজের মাধ্যমে বান্দার গুনাহ মাফ হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.)। একদিন তিনি অজুর পানি চাইলেন। অজু শুরু করে—তিনবার সুন্দর করে দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন। তারপর তিন বার কুলি করলেন। নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। এরপর তিন বার চেহারা ধুলেন। দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ভালোভাবে তিনবার ধুলেন। তারপর মাথা মাসেহ করলেন এবং টাখনু পর্যন্ত পা তিনবার ধৌত করলেন। এরপর বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এভাবে (সুন্দর করে) অজু করবে, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, যাতে (দুনিয়ার) কোনো খেয়াল করবে না, তার পেছনের সকল (ছগিরা) গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। ’ (বুখারি, হাদিস ১৫৯; মুসলিম, হাদিস ২২৬)
‘তাহিয়্যাতুল অজু’র মাধ্যমে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়
নামাজের মাধ্যমে শুধু গুনাহই মাফ হয় না। বরং এ আমলের দ্বারা মর্যাদাও বৃদ্ধি পায়। একদিন ফজরের নামাজের সময় বেলাল (রা.)-কে নবী (সা.) বললেন, ‘বেলাল! আমাকে বল দেখি, ইসলামে দাখেল হওয়ার পর থেকে তোমার কোন আমলটি তোমার কাছে (সওয়াবের আশার দিক থেকে) সবচেয়ে উত্তম বলে মনে হয় কারণ, আমি জান্নাতে আমার সামনে সামনে তোমার জুতার আওয়াজ শুনেছি। ’
বেলাল (রা.) বললেন, ‘তেমন কোনো আমল আমার নেই; যার দ্বারা আমি (বিপুল সওয়াবের) আশা করতে পারি। তবে দিবা-রাত্রির যখনই অজু করি; তখনই সেই অজুর মাধ্যমে যে কয় রাকাত সম্ভব হয়, নামাজ আদায় করি। ’ (বুখারি, হাদিস ১১৪৯; মুসলিম, হাদিস ২৪৫৮)
অন্যান্য আমলের পাশাপাশি এই আমলেও যত্ন নেওয়া উত্তম। মাফ হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের ওপরও আমল হয়। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।