তিন রপ্তানিকারকের ৪ কন্টেইনার আটক
খাদ্যপণ্য ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক কন্টেইনার পণ্য রপ্তানি করছে ঢাকার ফাদার ফুড ও অ্যাগ্রো লিমিটেড। পণ্যগুলো পাঠানোর জন্য কন্টেইনারজাতকরণসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জাহাজীকরণের আগেই কন্টেইনারটির খালাস স্থগিত করে তাতে তল্লাশি চালায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তল্লাশিকালে কন্টেইনারটিতে ঘোষণাবহির্ভূত সুগন্ধি চাল, কদুর তেল পাওয়া যায়।
শুধু এই চালানটি নয়, একইভাবে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য পাঠানোর দায়ে রপ্তানি পণ্যের আরও দুটি চালান আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ওই দুটি চালানের একটি রূপগঞ্জের রূপসী ফুড লিমিটেডের খাদ্যপণ্য ঘোষণা দিয়ে কানাডায় এক কন্টেইনার পণ্য পাঠানোর কথা ছিল। অন্য চালানটি নারায়ণগঞ্জের খান অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফ্রজেন ফুড প্রসেসর খাদ্যপণ্য ঘোষণা দিয়ে আরব আমিরাতে দুই কন্টেইনার পণ্য পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু চালান দুটিতে ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য থাকায় দুটি চালান আটক করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, তিনটি চালানের রপ্তানিকারক ভিন্ন হলেও একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তিনটি চালান খালাসের দায়িত্বে ছিল। গত ২৩ মে চালান তিনটি খালাসের জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খাতুনগঞ্জের আকন্দ ব্রাদার্স বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে। রপ্তানিকারকের ঘোষণা অনুযায়ী যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে কন্টেইনার স্টাফিং করা হয়।
এর মধ্যে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গোপন সংবাদের মধ্যে জানতে পারে চালান তিনটিতে ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছেÑ এমন সংবাদ পেয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চালান তিনটির খালাস স্থগিত করে। পরে রপ্তানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে গত সোমবার তিনটি চালানের চারটি কন্টেইনার খুলে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। কায়িক পরীক্ষায় চারটি চালানে ঘোষণাবহির্ভূত ২ লাখ ৩৬ হাজার পিস (প্রায় ৩০৭ কেজির বেশি) ওষুধ ও ৪৬ টন রপ্তানি নিষিদ্ধ সুগন্ধি চাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে ফাদার ফুড ও অ্যাগ্রো লিমিটেডের কন্টেইনার খুলে তাতে এক হাজার ৬৬৩ কেজি (৩৭০০ পিস) ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য এবং ৮ হাজার ৯০৮ কেজি সুগন্ধি চাল পাওয়া যায়। রূপসী ফুড লিমিটেডের কন্টেইনার খুলে তাতে ঘোষণা দেওয়া পণ্যের পাশাপাশি ১০ হাজার ৬৪৬ কেজি রপ্তানি নিষিদ্ধ সুগন্ধি চাল পাওয়া যায়। এ ছাড়া খান অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফ্রজেন ফুড প্রসেসর প্রতিষ্ঠানের দুটি কন্টেইনার খুলে তাতে ঘোষণাবহির্ভূত বিভিন্ন ধরনের ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬০ পিস ওষুধ, ৯ হাজার ৭৫০ পিস গামছা, ৩ হাজার পিস মশারি এবং ১৫ হাজার ১৪০ কেজি রপ্তানি নিষিদ্ধ সুগন্ধি চাল পাওয়া যায়।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিনহাজ উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কাস্টমস কর্মকর্তারা যাতে ধরতে না পারেন সেজন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো খাদ্যপণ্য ঘোষণা দিয়ে ওষুধ ও সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে আসছিল। কিন্তু আমাদের কাছে গোপন সংবাদ থাকায় তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তিনটি চালানের খালাসের দায়িত্বে একজন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রপ্তানিকারক সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে এ কাজটি করেছেন কি না আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি।