দক্ষিণ কোরিয়ায় মলমূত্র ভর্তি দুই শতাধিক বেলুন পাঠালেন কিম!
চিরশত্রু দক্ষিণ কোরিয়াকে অভিনব উপায়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রোপাগান্ডা লিফলেট আর মলমূত্র দিয়ে ভর্তি ২৬০টি গ্যাস বেলুন পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
বুধবার দেয়া এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সাদা রঙের এসব বেলুন এবং এগুলোর সাথে বেঁধে দেয়া প্লাস্টিকের ব্যাগ সাধারণ মানুষ যেন স্পর্শ না করে। সতর্ক করে বলা হয়েছে, এগুলোর মধ্যে নোংরা বর্জ্য এবং আবর্জনা রয়েছে। খবর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
এসব বেলুনকে বিপজ্জনক উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ৯টি প্রদেশের মধ্যে আটটিতেই ওইসব বেলুন পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরীক্ষা ও তদন্ত করে দেখছে।
এই ঘটনার কয়েকদিন আগে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার আন্দোলন কর্মীরা উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত এলাকায় ঘন ঘন লিফলেট এবং অন্যান্য আবর্জনা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তারা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সিতে (কেসিএনএ) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কিম বলেন, কোরিয়া সীমান্ত এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বেলুনের সাথে সংযুক্ত ব্যাগগুলোতে টয়লেট পেপার এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ ছড়িয়ে দিয়েছে তার দেশ।
এর কারণ হিসেবে কিম বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়া বছরের পর বছর ধরে উত্তর কোরিয়ার সাথে একই কাজ করে আসছে। তার প্রতিশোধ নিতেই এই পদক্ষেপ।
কিম আরও বলেন, আমরা এমন কিছু কাজ করেছি যা দক্ষিণ কোরিয়া সবসময় করে। কিন্তু আমি জানি না কেন তারা আগুনের ঝরনায় স্নান করার মতো কাজ করে।
দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের সাথে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে জড়িয়েছে এমন অভিযোগ করে কিম বলছেন, ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়।
১৯০৫ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত কোরিয়া জাপানের অধীনে ছিলো। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হেরে জাপানিরা সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে আত্মসমর্পণ করে। তখন ১৯৫০ সালে ৩৮ ডিগ্রি অক্ষরেখায় মানচিত্র বিভক্ত করে উত্তর কোরিয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের মতাদর্শে সমাজতান্ত্রিক ব্লকে, অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া পুঁজিবাদী আমেরিকার মতাদর্শের পুঁজিবাদী ব্লকে যোগ দেয়। বিভক্ত কোরিয়াকে সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রমণ করে। নানা উত্তেজনের মধ্যে ১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে যুদ্ধ থামলেও চিরশত্রু বনে যায় দুই দেশ।