দুর্নীতি করে কেউ প্রশ্রয় পাবে না: সিডিএ নতুন চেয়ারম্যান
দুর্নীতি করে কেউ প্রশ্রয় পাবে না উল্লেখ করে প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ।
মঙ্গলবার (৭ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে মতবিনিময় কালে সাংবাদিকরা সিডিএর অভ্যন্তরে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগও তুলে ধরলে তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটুকু বলতে পারি, দুর্নীতি করে কেউ আমার কাছে প্রশ্রয় পাবে না। সিডিএ দুর্নীতিমুক্ত করতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, অবশ্যই নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করে দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
চাক্তাইখালের মোহনা সম্প্রসারণ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না
চাক্তাইখালের মোহনা সম্প্রসারণ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না বলে মনে করছেন সিডিএ মোহাম্মদ ইউনুছ। কর্ণফুলী নদীতে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঝুলন্ত সেতু দাবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের একটি প্রধান সমস্যা। চাক্তাই খালের মোহনা সম্প্রসারণ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না। সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী কর্ণফুলী নদীতে পিলার সেতুর পরিবর্তে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। কিন্তু সেটি না হওয়ায় এখনো চাক্তাই খালের মোহনায় পলি জমে থাকে। পলি সরাতে গেলে ব্রিজের ভিত দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
র্যাম্প নির্মাণের ইস্যুতে ‘কৌশলী’ অবস্থান ইউনুসের
নগরের টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে শতবর্ষী গাছ কেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের ইস্যুতে ‘কৌশলী’ অবস্থান সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাম্প নির্মাণের বিবাদমান এই ইস্যুতে অবস্থান স্পষ্ট করেননি তিনি।
সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্যের জবাবে ইউনুছ বলেন, ‘উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রাখতে হবে। মানুষের প্রয়োজনে করতে হবে। তবে বিকল্প অনুসন্ধান না করে গাছ কেটে ফেলার পক্ষে আমি নই। প্রয়োজনে যেখানে একটি গাছ কাটা হবে, সেখানে ৫০টি গাছ লাগাতে হবে।’
‘জনমতের বিষয়টি অবশ্যই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সব বিষয়ে আমি অভিজ্ঞ নই। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ আমি কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
বিশ্বমানের নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে চট্টগ্রামকে
সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘বিশ্বমানের নগরী গড়তে প্রয়োজন সিটি করপোরেশনসহ সব সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টা। আমি কাজ করে যাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে সিডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, মানুষের কল্যাণে কাজ করার অ্যাসাইনমেন্টে আমাকে নিযুক্ত করেছেন। সেই গুরুদায়িত্ব আমি এবাদত হিসেবে গ্রহণ করেছি।’
সিডিএকে গতিশীল করতে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে চট্টগ্রামে ছোট ছোট প্লট না দিয়ে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দের মাধ্যমে আবাসন সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।
যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য জসীম চৌধুরী সবুজ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, প্রবীণ সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি ও ইসকান্দর আলী চৌধুরী, নয়াবাংলা সম্পাদক জেড এম এনায়েতউল্লাহ, প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি আসিফ সিরাজ এবং সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক ও নুরুল আলম।
প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন প্রেস ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন কুমার মল্লিক, যীশু রায় চৌধুরী, দেবপ্রসাদ দাস দেবু, মুস্তফা নঈম, আলীউর রহমান, আলমগীর সবুজ, আরিচ আহমেদ শাহ, শাহনেওয়াজ রিটন এবং আরিফ রায়হান।