দেশে গুরুতর অপরাধ বেড়েছে
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগ এবং মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত মামলা ১৯৮টি বৃদ্ধি পেয়েছে। নাশকতামূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকতে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয় সভায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগ এবং মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী এপ্রিল মাসে ২ হাজার ১৭৩টি গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা ১৯৮টিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে কর্মরত বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তাধীন অভিযোগের বিষয়ে সভায় বলা হয়, প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এপ্রিল মাসে ৭টি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। জানুয়ারি ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত ৪২টি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং এই সময়ে ৩২টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
বর্তমানে ৬০টি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে এক মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে ৫টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩টি, খুলনা বিভাগে ৮টি, বরিশাল বিভাগে ৩টি, মোট ১৯ টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রেরণ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
তিন মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে ৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬টি করে, রাজশাহী বিভাগে ৪টি, খুলনা ২টি, বরিশাল বিভাগে ১৩টি, সিলেট বিভাগে ১টি, রংপুর বিভাগে ৩টি করে মোট ৩৬টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। তিন মাসের ঊর্ধ্বে অনিষ্পন্ন অভিযোগের প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দ্রুত প্রেরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
গণশুনানি সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বলা হয়, এপ্রিল মাসে সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সমূহে মোট ২ হাজার ৬০২ দিন গণশুনানি গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২৭ হাজার ৩৬০ জনের অভিযোগ/আবেদন নিস্পত্তি করা হয়েছে। মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে সেবা প্রত্যাশির সংখ্যা ৮ হাজার ২৩৭টি হ্রাস পেয়েছে এবং অভিযোগ নিস্পত্তি ৭ হাজার ৩৫২টি কম নিষ্পত্তি হয়েছে। মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে গণশুনানি গ্রহণের সংখ্যা ৭৭৭টি হ্রাস পেয়েছে।
সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত আলোচনা হয়। পেনশন স্কিমে গত মার্চ মাসে ২৩ হাজার ৫টি এবং এপ্রিল মাসে ৬৩ হাজার ৭৮১ জন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। এই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আযহার সময় নৌপথে নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত আলাচনায় বলা হয়, ঢাকা হতে দুরপাল্লাগামী লঞ্চ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া-কাজীরহাট, শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি, চাঁদপুর-শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ, ভোলা-লক্ষীপুর এবং লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটে ফেরি সার্ভিস ও দেশের বিভিন্ন নৌপথে স্টিমার, লঞ্চসহ জলযানসমূহ সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ এর আওতায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২০২২ সাল পর্যন্ত দায়েরকৃত মামলার তথ্য পর্যালোচনা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল ২০২৪ মাসে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১ হাজার ৪১২টি মামলা এবং বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১ হাজার ৭৪৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর আওতায় ২০২২ সাল পর্যন্ত দায়েরকৃত বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সমূহে ৫ হাজার ৬২৭টি এবং বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২ হাজার ৯০৫টি মামলা অনিষ্পন্ন রয়েছে। মার্চ ২০২৪ মাসের তুলনায় বিবেচ্য এপ্রিল মাসে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত অনিষ্পন্ন মামলা ১ হাজার ৪০৫টি এবং বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত অনিষ্পন্ন মামলা ১ হাজার ৭৪৩টি হ্রাস পেয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেন।