দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৫৭ শতাংশ প্রার্থী ব্যবসায়ী
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীর মধ্যে শতকরা ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ ব্যবসায়ী রয়েছেন বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস ভবনে টিআইবির কার্যালয়ে ‘নির্বাচনী হলফনামায় তথ্যচিত্র, জনগণকে কী বার্তা দিচ্ছে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। ফলাফল প্রকাশ করেন টিআইবির গবেষণা দলের প্রধান তৌহিদুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন আরও দুই সদস্য রিফাত রহমান ও রফিকুল ইসলাম।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনে এক হাজার ৮৯৬ জন অংশ নিয়েছেন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১৮ শতাংশ। আর দলীয় প্রার্থী ৮২ শতাংশ।
প্রার্থীদের পেশার কথা উল্লেখ করে গবেষণার ফলাফলে তিনি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীর মধ্যে শতকরা ৫৭ দশমিক ৩৪ জন পেশা বিবেচনায় ব্যবসায়ী রয়েছেন। প্রার্থীদের মধ্যে আইনজীবী ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ, কৃষিজীবী রয়েছেন সাত দশমিক ৮১ শতাংশ রয়েছেন। চাকরিজীবী পাঁচ দশমিক ১৬ শতাংশ, শিক্ষক চার দশমিক ৯৫ শতাংশ, রাজনীতিবিদ দুই দশমিক ৮৬ শতাংশ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুই দশমিক ৭১ শতাংশ, চিকিৎসক দুই দশমিক ১৯, সাংবাদিক শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ, গৃহস্থালি শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং অন্যান্য পেশার প্রার্থী রয়েছেন ছয় দশমিক ৩০ শতাংশ।
গবেষণায় আরও বলা হয়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থী ছিল ৪৭ দশমিক ৪০ শতাংশ, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থী ছিল ৫৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থী ছিল ৫১ দশমিক ৪০ শতাংশ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ী প্রার্থী আছে ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের অংশ নেওয়া বাড়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা সবসময়ই উদ্বেগ প্রকাশ করি। আমাদের দেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যবসা ও রাজনীতি দুটি একাকার হয়ে গিয়েছে। যেটা ব্যবসা সেটাই রাজনীতি, আবার যেটা রাজনীতি সেটাই ব্যবসা হয়ে গিয়েছে। রাজনীতিতে যারা আসেন তারা অনেকেই ব্যবসার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা রাজনীতিতে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে সুবিধা অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসার প্রসার ঘটান। এর ফলে যেটা হয়, দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আমরা যেটা দেখছি, আইনি সিদ্ধান্ত, অনেক প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন কিংবা নীতির পরিবর্তন জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে হয়েছে বলা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পেয়েছি আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণার বিশ্লেষণে, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মহলের করায়ত্ত হয়ে যায়। যার ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াগুলো রাষ্ট্রীয় বা জনগণের স্বার্থের তুলনায় ব্যবসায়ী স্বার্থের প্রতিনিধিত্বের জায়গায় চলে যায়।