রাজনীতি

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন পরশ

শেখ ফজলে শামস পরশ শহীদ শেখ মনির জ্যেষ্ঠপুত্র। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান। তিনি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের স্পর্শকাতর এবং আবেগঘন আসন হিসেবে পরিচিত ধানমন্ডি আসন থেকে তিনি নির্বাচন করবেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকরা বলছেন যে পরশ আগামী নির্বাচনে ধানমন্ডি আসন থেকে নির্বাচন করবেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। নাটকীয় কোনো পরিবর্তন না হলে তার প্রার্থীতা নিয়ে কোনো রকম প্রশ্ন নেই। উল্লেখ্য যে ২০০৮ এবং ২০১৪ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তার ছোট ভাই শেখ ফজলে নূর তাপস। তাপস মেয়র হওয়ার পর এই আসনটি শূন্য হয়ে যায়। শূন্য আসনে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু ধানমন্ডির মত একটি আবেগঘন আসনে এরকম একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মনোনয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইতিবাচকভাবে দেখেনি। তাছাড়া তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর ধানমন্ডি এলাকায় আওয়ামী লীগ বা জনগণের সঙ্গে তেমন একটা সম্পর্ক রাখেননি। তাকে এলাকার কর্মকান্ডের মধ্য খুব একটা দেখা যায় না।

অন্যদিকে ধানমন্ডি এলাকায় নানা কারণেই স্পর্শকাতর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এখানে অবস্থিত। এই আসনটি তাই আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগঘন। আর এ কারণেই ২০০৮ নির্বাচনে তাপসকে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার দিনেই ধানমন্ডিতে বসবাসরত শেখ ফজলুল হক মনিকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিও সেসময় নিহত হন। তখন পরশ এবং তাপস ছিলেন শিশু। সেই শিশুরা আজ বড় হয়েছে। তারা পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। শেখ পরশের নেতৃত্বে আওয়ামী যুবলীগ রাজপথে সরব রয়েছে। বিএনপি-জামাতের আন্দোলনে বিরুদ্ধে শান্তি এবং সংহতি কর্মসূচিগুলোতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সক্রিয়তার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ অন্যতম। একজন মেধাবী গুণি মানুষ হিসেবে পরশের খ্যাতি রয়েছে। তাছাড়া তিনি সজ্জন এবং আদর্শবান হিসেবেও পরিচিত। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তিনি ইতোমধ্যে আলাদা সম্মানের জায়গা নিয়েছেন। আর যেহেতু ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে তার পিতা পিতা শহীদ হয়েছেন সে কারণেই এই আসনটির যোগ্য দাবিদার একমাত্র তিনি বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। ইতোমধ্যে পরশ এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে আগামী নির্বাচনে পরশ ধানমন্ডি আসন থেকে নির্বাচন করবে এর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বর্তমানে তিনি এমপি রয়েছেন তার ব্যাপারে নেতিবাচক এবং তারাও এই আসনে পরিবর্তন চেয়েছেন। একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদেরকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে এ আসনের মর্যাদা সমুন্নত রাখা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি বিজড়িত এই আসনটির জন্য পরশকেই সবচেয়ে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d