নতুন মন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করছেন। ইতোমধ্যে গত বৃহস্পতিবার তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ এবং কীভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরিচালিত হবে সে ব্যাপারে তিনি অর্থমন্ত্রীকে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য করণীয় কাজের অগ্রাধিকার গুলো সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নতুন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কারিকুলাম নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বিতর্ক গুলোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান তিনি পুরো বিষয়গুলোকে কীভাবে দেখেন তা ব্যাখ্যা করেছেন।
একইসাথে শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল নাসের চৌধুরীর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার জন্য নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা যাচ্ছে। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী সময় দিয়েছেন। এখানে তিনি স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অর্জন এবং এই গতিধারাকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট পথ নির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র বলছে, যারা নতুন মন্ত্রী হয়েছেন, তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে বৈঠক করবেন এবং মন্ত্রণালয়গুলোর কাজকর্ম কীভাবে সুষ্ঠুভাবে করা যায়, কীভাবে এই কাজকর্ম গুলোকে গতিশীল করা যায় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান নির্দেশনা বা চাওয়ার জায়গাটা হল আওয়ামী লীগ এবারের নির্বাচনে যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে, সেই নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী যেন মন্ত্রণালয়গুলো পরিচালিত হয়। স্বল্প মেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য স্থির করে নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো পূরণ করাটাই যেন সরকারের কার্যক্রমের প্রধান বিষয়ে পরিণত হয় সে ব্যাপারে তিনি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন। পাশাপাশি দুর্নীতি, অনিয়ম যেন কোনো মন্ত্রণালয়ে না হয় সে ব্যাপারে মন্ত্রীদেরকে কঠোর বার্তা দেওয়া হবে। এবার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছে। কাজেই দুর্নীতিকে কোনোভাবেই আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
এ ছাড়াও সরকারি অপচয় কমানো, বিশেষ করে যে সমস্ত জায়গা গুলোতে অপচয় হচ্ছে বলে মনে করা হয় সেই অপচয় জায়গাগুলোকে যেন মন্ত্রীরা দৃষ্টি দেন সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদেরকে সুষ্পষ্ট নির্দেশনা দিচ্ছেন। পাশাপাশি প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে যেন সমন্বয় করে কাজ করা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মিলে মিশে একটি সম্মিলিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মকাণ্ড করা হয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিবেন। ইতোমধ্যে সরকার কয়েকটি অগ্রাধিকার বিষয় নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। রোজায় যেন জিনিসপত্রের দাম হঠাৎ করে বেড়ে না যায় সে বিষয়টি দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিচ্ছেন।