নর্দমায় পড়ে থাকা ৩৭টি কোরআন ও ১৩টি আমপারা উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য
সলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনের ৩৭টি এবং ১৩টি আমপারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারোঘরিয়া ইউনিয়নের জনমানবহীন একটি ফসলী মাঠের পাশের নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক নর্দমায় পড়ে থাকা কয়েকটি কাপড়ের ব্যাগের মধ্যে এসব কোরআন ও আমপারা উদ্ধার করে। পরবর্তীতে কোরআনগুলো উদ্ধার করে বারোঘরিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুর চেয়ারম্যানপাড়ার জাফর হোসেন খানের ছেলে জহুর খানের বাড়িতে রাখা হয়।
এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। আর এসব পবিত্র গ্রন্থ স্বচক্ষে দেখতে ভিড় করছেন আশেপাশের গ্রাম থেকে আসা বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় একটি নর্দমায় কয়েকটি কাপড়, প্লাস্টিক ও টিস্যু ব্যাগ ভেসে থাকতে দেখে দুই যুবক। পরে একটি ব্যাগ তুলে দেখে তার মধ্যে পবিত্র কোরআন রয়েছে। পরবর্তীতে ১৪-১৫টি ব্যাগ উপরে তুলে তা থেকে মোট ৩৭টি কোরআন ও ১৩টি আমপারা উদ্ধার করে তারা।
এরপর সেগুলো টিউবওয়েলের পানিতে ধুয়ে শুকানোর জন্য রাখা হয় জহুর খানের বাড়ির উঠানে। আর এসব গ্রন্থের মোড়ক ও অক্ষর স্পষ্ট। এমনকি কয়েকটি আমপারা নতুন।
স্থানীয়দের ধারনা, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা জনমানবহীন রাস্তার পাশে থাকা নর্দমায় এসব পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ফেলে গেছে। তবে এ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য তাদের। উদ্ধারের পর রোববার বিকেলে এক ব্যক্তির চাহিদার প্রেক্ষিতে একটি কোরআন ও দুটি আমপারা দেয়ার পর সেখানে এখন ৩৬টি কোরআন ও ১১টি আমপারা অবশিষ্ট রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, কাজটি যে বা যারাই করুক না কেন তা ঠিক করেনি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এভাবে নর্দমায় ফেলা মোটেই উচিত হয়নি। আমরা এর জন্য খুবই ব্যাথিত। আমরা কষ্ট পেয়েছি।
মহাগ্রন্থ আল কোরআন উদ্ধারকারী সিহাব বলেন, দুই বন্ধু মিলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ নর্দমায় কয়েকটা ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখি। একটা ব্যাগ তোলার পর কোরআন দেখি। পরবর্তীতে বাকিগুলো তুলে সেগুলোর মধ্যে থাকা কোরআন ও আমপারাগুলো বাসায় ধুয়ে রেখেছি।
ইসলামের দৃষ্টিতে কাজটি মারাত্মক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ উল্লেখ করে স্থানীয় আলেমরা বলছেন, কোরআন নষ্ট হলে তা মাটির নিচে পুঁতে ফেলার নিয়ম রয়েছে। তবে ভালো ও পড়ার উপযোগী এসব ধর্মগ্রন্থ নর্দমায় ফেলা গর্হিত কাজ।
লক্ষীপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. এখলাসুর রহমান বলেন, নষ্ট কোরআন মাটির নিচে পুঁতে রাখার বিধান রয়েছে। তবে এভাবে নর্দমায় ফেলা মারাত্মক পাপের কাজ। যে কোন ধর্মগ্রন্থ এভাবে ফেলা মোটেই উচিত হয়নি।
এ বিষয়ে বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশীদ জানান, নর্দমায় কোরআন ও আমপারা পড়ে থাকার পর তা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে তা জানা যায়নি। আমরা প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে এ নিয়ে কোনো প্রকার সংঘাতে না জড়ানোর জন্য তিনি এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন।