নানা সমস্যায় জর্জরিত চবির আলাওল হল
সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থীর জন্য তিনটি পানির ফিল্টার। ১১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য চারটি টয়লেট। ডাইনিং বেসিনের যাচ্ছেতাই অবস্থা থেকে শুরু করে চেয়ার-টেবিল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আলাওল হল।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন প্রভোস্ট না থাকায় নিয়মিত কাজ করেন না কর্মচারীরা। অপরিষ্কার থাকে টয়লেট-বাথরুম, ডাইনিংয়ের মানহীন খাবার এবং দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যায় রয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, হলটির ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য সুপেয় পানির ফিল্টার রয়েছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে দুইটি প্রায়ই নষ্ট থাকায় পানি আসে না। এ ছাড়া হলের পশ্চিম ব্লকের প্রথম তলায় একটি টয়লেট ব্লক এবং দ্বিতীয় তলায় আরও একটি টয়লেটের দরজা ভাঙা। এ দুই তলায় প্রায় ১১০ জনের জন্য সচল টয়লেট রয়েছে মাত্র চারটি টয়লেট, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রায় এক বছর ধরে হল কর্তৃপক্ষকে বলে আসছি টয়লেট দুটি সচল করে দিতে। কিন্তু উনারা এগুলো সচল করেনি। এ ছাড়া ডাইনিংয়ের বেসিন দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করাই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দিনের পর দিন এমন অপরিষ্কার থাকায় সেখানে যাওয়া দুঃসহ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি হলে খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং দৈনিক পত্রিকারও সংকট রয়েছে। হলের ডাইনিংয়ে জনবল কম থাকায় খাবার রান্না ও পরিবেশন করার ক্ষেত্রেও বেগ পেতে হচ্ছে বাবুর্চিদের। সংকট নিরসনে গত রোববার (১৩ মে) দুপুরের রান্না বন্ধ রেখে হলের সামনে অবস্থান নেন তারা।
হলের সমস্যা নিয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যখনই কোনো সমস্যা নিয়ে হলের অফিসে যায়, তখন অফিস থেকে বলা হয় হলে প্রভোস্ট স্যার নেই। আমরা কিছু করতে পারব না। আমাদের হাতে সবকিছু থাকে না।
এ বিষয়ে হলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সৈয়দ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করি সব সময় শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করতে, কিন্তু হলের ধারণ ক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী উঠায় সুপেয় পানি এবং টয়লেটে সংকুলান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক সদরুল আলম কনক বলেন, হলে পানির ফিল্টার সমস্যা ছিল ওটা আমরা ঠিক করেছি। আর নিচতলার ওয়াশরুমগুলো সংস্কারকাজের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারতো না। আমরা কয়েকবার কন্ট্রাক্টরদের নিকট চিঠি দিয়ে এগুলো ব্যবহার উপযোগী করেছি। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের খেলার সামগ্রী সংকট ছিল, আমরা সেগুলো আংশিক সমাধান করেছি। তাছাড়া হলে প্রভোস্ট না থাকায় সমস্যাগুলো স্থায়ীভাবে সমাধান করা যাচ্ছে না। আমরা উপাচার্য স্যারকে জানিয়েছি হলে প্রভোস্ট না থাকায় বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। স্যার অতিসত্বর নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, আলাওল হলের সমস্যাগুলো মাথায় রেখেই দ্রুত প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু অনেকেই দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) একজনকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়েছে। উনি দ্রুতই হলে যোগদান করবেন।