নোয়াখালীতে বন্যায় ২১ লাখ মানুষ পানিবন্দি, নিহত ৮
নোয়াখালীতে তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। জেলার বন্যা কবলিত আটটি উপজেলায় নতুন করে আরও দেড় থেকে দুই ফুট পানি বেড়ে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
এছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই লাইনম্যানসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। এতে এখন পর্যন্ত বন্যায় নোয়াখালীতে আটজন নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৫টায় পর্যন্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নোয়াখালীর আট উপজেলায় বর্তমানে ২১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে টানা তিনদিনের বৃষ্টি বন্ধ না হওয়ায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আটকাপড়া মানুষের মাঝে শঙ্কা বিরাজ করছে। তবে আজ দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি বন্ধ রয়েছে এবং আকাশে রোদ উঠায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ পরিচালনায় সহায়ক হচ্ছে।
এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ও প্রধান সড়কের আশপাশের মানুষ ত্রাণ সহায়তা পেলেও এখনও প্রত্যন্ত এলাকার হাজার হাজার অসহায় মানুষ ত্রাণ পায়নি। তাদের উদ্ধারের জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, নোয়াখালীর বন্যা কবলিত আট উপজেলায় ২১ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এর মধ্যে ১১৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ২ লাখ ১৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মো. মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, বন্যার কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাবস্টেশন আগে থেকেই বন্ধ। সোমবার সকালে বেশ কয়েকজন গ্রাহক অফিসে এসে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করার জন্য খারাপ ব্যবহার করেন। পরে দুপুরে বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করতে গিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই লাইনম্যান ঘটনাস্থলে মারা যান।
এ নিয়ে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো আটজনে।
অন্যদিকে পানিবন্দি মানুষের সাপ ও বিষাক্ত পোকামাকড়ের আতঙ্কে আছে। গত তিন ধরে এ পর্যন্ত নোয়াখালীতে শতাধিক মানুষ সাপের দংশনে আহত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া রোগীর সংকুলান হচ্ছে না।