পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালকদের
স্বৈরশাসন ও পরিবারতন্ত্র থেকে মুক্ত করার দাবিতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালকরা পদত্যাগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতিমধ্যে একজন সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ অন্তত ৭ জন পরিচালকের পদত্যাগপত্র জমা হয়েছে।
বাকি পরিচালকদের পদত্যাগপত্রও শিগগির চেম্বারে পৌঁছাবে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ) থেকে প্রশাসক নিয়োগ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পাবে শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন।
বিষয়টি একাধিকসূত্র নিশ্চিত করেছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের শীর্ষ টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পদত্যাগ করেন পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, সিপিডিএলের এমডি ইফতেখার হোসেনসহ আরও অন্তত ৫ জন পরিচালক।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট সকাল ১০টায় আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেম্বার কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে বক্তব্য দেন বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি রাকিবুল আলম, চেম্বারের জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি এসএম নুরুল হক, আবদুল মান্নান রানা, মাহবুব রানা প্রমুখ। চেম্বারকে সংস্কারের দাবি জানিয়ে তারা বলেছিলেন, বর্তমান চেম্বার পরিচালনা পর্ষদকে পদত্যাগ করতে হবে। মেম্বারশিপ সহজীকরণ করতে হবে। যারা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আছেন তারা সদস্য হবেন, নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন। পরিবারতন্ত্রের কবলে পড়ে চট্টগ্রাম চেম্বার দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেনি।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, চেম্বারের পরিচালকেরা পদত্যাগ করছেন। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগ দেবেন। এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে আশাকরি।
চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বাংলানিউজকে বলেন, চেম্বারের পরিচালকেরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তের কথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চেম্বার সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন। এখন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালের ৩০ মার্চ। ওই নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ লতিফ-সমর্থিত মাহবুবুল আলম-নুরুন নেওয়াজ সেলিম পরিষদ ২৪ পদের মধ্যে ২০টিতে জয়লাভ করে। প্রতিদ্বন্দ্বী মোরশেদ-সালাম ঐক্য পরিষদ পায় ৪টি। মাহবুবুল আলম প্রথমবারের মতো সভাপতি হন। পরের চারবার তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে কোনো প্যানেল বা প্রার্থী ছিল না। তাই ভোটও হয়নি। ২০০৮-১০ মেয়াদে এমএ লতিফ প্রথম চেম্বারের সভাপতি হওয়ার পর থেকে তাঁর প্যানেলই এ সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। চেম্বারের নেতৃত্বে কারা আসবেন, তা মূলত এমএ লতিফই ঠিক করে দেন, কারণ চেম্বারের ভোটারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল।