পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে ব্যস্ত চাষিরা
চট্টগ্রাম: বাঁশখালীর উপকূল জুড়ে লবণ উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, পুঁইছড়ি, শেখেরখীল, পশ্চিম মনকিচরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ লবণ চাষে জড়িত। আবহাওয়া ভালো থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা তাদের।
গত মৌসুমে দেশে ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। এছাড়া লবণ চাষের জমি ও চাষির সংখ্যা বেড়েছে। ১৯৬১ সাল থেকে দেশে পরিকল্পিতভাবে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থিত বিসিকের লবণ শিল্পের উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যালয়ের আওতাধীন ১২টি লবণকেন্দ্রের মাধ্যমে বাঁশখালীতে লবণ চাষের জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ, ঋণ প্রদান এবং প্রযুক্তি সম্প্রসারণসহ সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আমদানি না করে লবণ উৎপাদনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে চলতি লবণ মৌসুমে এক মাস আগেই লবণ চাষিদের মাঠে নামানো হয়। লবণ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদী (১ বছর), মধ্যমেয়াদী (১-৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদী (৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষিদের অগ্রিম লবণ চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ, লবণ চাষের নতুন এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং সম্প্রসারণ, সহজ শর্তে লবণ চাষিদের ঋণ প্রদান, একরপ্রতি লবণ উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ, প্রকৃত লবণ চাষিদের কাছে বরাদ্দকরণ, লবণ চাষের জমির লিজ মূল্য নির্ধারণ, লবণ চাষের জমি সংরক্ষণ, আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদনে প্রদর্শনী ও উৎপাদিত লবণের মান নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সহায়তা প্রদান, জরিপ পরিচালনা, লবণ চাষ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ এবং লবণ উৎপাদন, মজুদ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাঁশখালীর লবণ চাষিরা জানান, নভেম্বর থেকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়ে এপ্রিলের শেষ সময় পর্যন্ত চলে। এসময় বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। বর্ষায় উৎপাদিত লবণ মাঠেই গর্ত করে পুঁতে রাখতে হয়। এতে খরচ বাড়ে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে লবণ ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে লবণ বিক্রি করা হয়। আগে সনাতন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন করা হতো। বর্তমানে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ চাষ করা হয়।