পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক ঐক্যের আহ্বান হেফাজতের
পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান অস্থিরতা নিরসনে সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, পার্বত্য জেলায় চলমান অস্থিরতা বাইরের আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। এ অস্থিতিশীলতা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। তাঁরা বলেন, “অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে শলাপরামর্শ করুন। পার্বত্য জেলার নিরীহ বাঙালি ও উপজাতি সবাই আমাদের ভাইবোন। সবাই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে সমঝোতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেখানকার স্থানীয় দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সাথেও আলোচনায় বসে সমন্বয়পূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
হেফাজত নেতারা পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্ন। বাংলাদেশবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দমন করতে হবে। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে দেশের শত শত দেশপ্রেমিক যুবক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় পাশে থাকবে বলেও তারা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব কর্তৃক ‘বাঙালি পরিচয়’ চাপিয়ে দেওয়ার ফলেই পাহাড়ে অশান্তির সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশি’ জাতীয়তা গৃহীত হওয়ায় উপজাতিরা আত্মপরিচয়ের সংকট থেকে মুক্তি পায়। সংবিধান সকলের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় স্বীকার করে এবং কোটাব্যবস্থার মাধ্যমে পাহাড়িদের মূলধারায় সংযুক্ত করার ব্যবস্থা করেছে। তবে পাহাড়ি বাঙালিরা এখনো সুবিধাবঞ্চিত।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমাদের পাহাড়ে আদিবাসী বলে কিছু নেই।” তাঁরা বলেন, ইতিহাস অনুসারে ২৫০-৩০০ বছর আগে এই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো বার্মা, ভারত ও আশপাশের অঞ্চল থেকে এসে বসতি গড়েছে। ১৯৯৭ সালের শান্তিচুক্তিও ‘উপজাতি’ হিসেবেই স্বাক্ষরিত হয়েছে। তাই তাদের আদিবাসী বলার কোনো যুক্তি নেই।
তবে, পার্বত্য অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেন। বিভিন্ন খ্রিস্টান মিশনারি ও এনজিও এতে জড়িত বলে অভিযোগ করেন তারা। হেফাজত নেতারা বলেন, এদেশের সেনা-জনতা এ ধরনের ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়িত হতে দেবে না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোনো চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে বলেও তারা জানান।