পাষণ্ড বাবার মৃত্যুদণ্ড
নগরের উত্তর পতেঙ্গা হাউজিং রোডের ডেবারপাড় এলাকায় নিজের ১২ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে মো. নাছির মোল্লাকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত ।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় দেন।
মো. নাছির মোল্লা (৩৫), ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার পশ্চিম শৌলজালিয়া এলাকার মৃত জলিল মোল্লার ছেলে। তিনি নগরের উত্তর পতেঙ্গা ডেবার পাড় হাউজিং কলোনী রোড মনছুরের ভাড়া ঘরে বসবাস করতেন।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আরিফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আসামি মো. নাছির মোল্লা ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে নিজের মেয়ে নয় বলে অস্বীকার করে। ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি মেয়ে বলে প্রমাণিত হয়েছে। মামলার অন্যান্য আলামত এবং আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড এবং তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড দণ্ডিত করা হয়েছে। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ভিকটিমরা দুই বোন। ভিকটিমের মা (৩৮), নগরের সিইপিজেড একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত ছিল। ভিকটিমের পিতা ২০২১ সালে ২৫ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভিকটিমের মা বাসায় না থাকার সুবাধে ভিকটিমকে পিতা একাধিকবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল সকালে ভিকটিমের মা গার্মেন্টসে চলে যায়। চার্জে থাকা মোবাইলটি আনতে গেলে ভিকটিমের পিতা ডেবার পাড়ের মনছুরের বিল্ডিং এর ২য় তলায় বাসায় ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময়ে পিতা ভিকটিমকে বলে তুমি আমার পিতা, তুমি আমার সঙ্গে এই কাজ করলেন কেন? তখন আমার তিনি আমাকে বলে, তোর জন্মদাতা পিতা কে? তার গ্যারান্টি কি? তোর প্রকৃত পিতা কে, তা তোর মা জানে। পরবর্তীতে একই দিন বিকেলে ভিকটিম নগরের ইপিজেড থানা এলাকায় বসবাসরত খালার বাসায় চয়ে যায়। খালার বাসায় গিয়ে ভিকটিম খালাকে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন। পরবর্তীতে খালা মা’কে মোবাইল ঘটনা খুলে বলেন। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে একই বছরের ২৮ এপ্রিল নগরের পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা একই ২৪ জুন অভিযোগ পত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন। ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে আটজন সাক্ষী ও আসামি নিজেই সাফাই সাক্ষী দিয়েছেন।