পুত্র সন্তানের শখে পাঁচ মাসের শিশুকে অপহরণ
স্বামীর প্রথম স্ত্রীর পরপর দুই কন্যা সন্তান হওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রী আঁখি আকতার মীম আশা করেছিলেন তার একটি পুত্র সন্তান হবে। কিন্তু তারও হলো কন্যা সন্তান। আর সেই কন্যা সন্তানটি অন্যকে দিয়ে দেন। এরপর এক ব্যক্তিকে স্বামী সাজিয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেন। ওই ভাড়া বাসায় মালিকের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে তার ৫ মাসের পুত্র শিশুকে গত ৩১ ডিসেম্বর কৌশলে নিয়ে পালিয়ে যান আঁখি আকতার মীম। টানা ১০দিন পর কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে উদ্ধার করা হয় সেই শিশুটিকে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আঁখি আকতার মীম ও স্বামী পরিচয়দানকারী সৈয়দ হোসেনকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
উদ্ধার হওয়া শিশু সিফাত বাংলাবাজার এলাকার মো. আবু ছৈয়দ আজাদের ছেলে। গ্রেপ্তার আঁখি আকতার মীম কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের টানকৃষ্ণনগর এলাকার হেলিম মিয়ার স্ত্রী ও স্বামী পরিচয়দানকারী সৈয়দ হোসেন কক্সবাজারের রামুর লট–উখিয়ারঘোনার মৃত মালেকুজ্জামানের ছেলে। পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘মীম ও সৈয়দ হোসেন স্বামী–স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছিল শিশু সিফাতকে অপহরণের উদ্দেশ্যে। যার জন্য সিফাতের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে মীম ও সৈয়দ। এক পর্যায়ে ৭ দিনের মাথায় ৫ মাসের শিশু সিফাতকে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়েরের পর তথ্য–প্রযুক্তির সহায়তায় সৈয়দ হোসেনের ভাই সৈয়দ
কাশেমকে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সৈয়দ কাশেমের দেয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে ৮ জানুয়ারি সৈয়দ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সৈয়দ হোসেনের দেয়া তথ্য মতে, বুধবার
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে গ্রেপ্তার করা হয় আঁখি আকতার মীমকে। মীম হেলিম মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। হেলিম মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ঘরে রয়েছে দুটি কন্যা সন্তান। বিয়ের পরে আঁখি আকতার মীম আশা করেছিলেন তাদের ঘরে পুত্র সন্তান জন্ম নিবে। কিন্তু ৩ মাস আগে মীম জন্ম দেন এক কন্যা সন্তান। ওই কন্যা সন্তানটিকে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন এবং এরপরই শিশু সিফাতকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিয়ে গিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর উদ্ধার হওয়া শিশুকে পিতা–মাতার কাছে হস্তান্তরের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।