পেকুয়ায় চিকিৎসকের ভুলে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, আদালতে মামলা
কক্সবাজারের পেকুয়ায় চিকিৎসকের ভুলে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর পেকুয়া বাজারস্থ ফোরকান হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে মৃত নবজাতকের বাবা পেকুয়া সদরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেখেরকিললাহ ঘোনার গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হল- পেকুয়া ফোরকান হাসপাতালের আবাসিক গাইনি মেডিকেল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা (২৮), হাসপাতালের ম্যানিজিং ডিরেক্টর ফোরকান উদ্দিন (৩৭), আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গালিব (৪০) ও হাসপাতালের সেবিকা রীণা রানী সুশীল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী গিয়াসউদ্দিনের স্ত্রী জোসনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে পেকুয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন পেকুয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে হবে বলে জানান। তারা পেকুয়া ফোরকান হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার জন্য নিয়ে যায়। আল্ট্রাসনোগ্রাফি শেষে ফোরকান হাসপাতালের মামলার বিবাদীরা ভুক্তভোগীকে ফুসলিয়ে এখানে উন্নত মেশিন ও যন্ত্রপাতি আছে এবং অল্প খরচে ডেলিভারি করতে পারবে বলে জানায়। তারাই সরল বিশ্বাসে সম্মতি দিয়ে ডেলিভারি করতে বলেন। কিন্তু ডেলিভারি করার সময় ভুল অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যু হয়। নবজাতকের মৃত্যু হওয়ার পর ভুক্তভোগী জোসনা বেগমের অবস্থা আশংকাজনক হলে চট্টগ্রামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। তখন চট্টগ্রামের ডাক্তার বলেন, ভুক্তভোগী নবজাতকের মায়ের বিশেষ স্থানে ১৫টি সেলাই হয়েছে, তাই এ ঘটনা ঘটেছে।
নবজাতকের মৃত্যুর পর ফোরকান হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ফোরকান তাদের চিকিৎসার খরচসহ বিভিন্ন লোভ লালসা দিয়ে থাকেন। কিন্তু তারা এসব কিছু লাগবে না বলে তাদেরকে স্পষ্ট বলে দেন। আজ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমার তিনটা কন্যা সন্তান রয়েছে। এবার চতুর্থ সন্তান জন্ম নেওয়ার আগে থেকে নিয়মিত আমার স্ত্রীকে চেক-আপ করানো হত। ৩টা মেয়ের পর এবার ছেলে সন্তান হবে আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ছেলে নবজাতকটি মারা গেছে। আমি এদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানতে পেকুয়া ফোরকান হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ফোরকানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মজিবুর রহমান বলেন, নবজাতক শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আমরা। এটার তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।