রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের লোক, আমরাই বানিয়েছি: জিএম কাদের

দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের লোক, আমরাই বানিয়েছি। তারা কোনো ভুল করলে অবশ্যই আমরা বলবো, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।

শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গেই আছি। কী হবে তা এখনো কেউ জানে না, যদি নির্বাচন হয় তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঘোষণা না দিয়ে চলে যাবো ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আছি। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয় তবেই আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো। যদি আমরা মনে করি সঠিকভাবে নির্বাচন হচ্ছে না, তখন আমরা ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করবো। ঘোষণাটা আমাদের তরফ থেকেই আসতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। নির্বাচন নিয়ে কোনো একক সিদ্ধান্ত হবে না, প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়া হবে। গণমাধ্যমের সামনে ঘোষণা দেওয়া হবে- এই কারণে আমরা নির্বাচন করছি, বা করছি না।’

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে জিএম কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্র না থাকলে কোনো প্রকল্প গণমুখী হয় না তার প্রমাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। বিবিসির দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, চার হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প বছরে আয় করছে একশ কোটি টাকা। ১৫ বছর হচ্ছে এটার লাইফ। এটা কি বাস্তবসম্মত হলো? তাহলে আবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পের জন্য চুক্তি কেন? আসলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে দুর্নীতির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। যেখানে বেশি দুর্নীতি করা যায় সেই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন হয়। আবার, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও কথা আছে। ভারতে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলারে। অথচ, একই কোম্পানির ২ হাজার ৪ শ মেগাওয়াট বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে নাকি ১৬ বিলিয়ন ডলার। এটি একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প। ইউরোপসহ অনেক দেশই এমন প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে একটি দুর্ঘটনা হলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।’

এক সরকার বেশিদিন (ক্ষমতায়) থাকলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ঢেকে রাখতে পারে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার বা সরকার প্রধান পরিবর্তন হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যদি অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় তাকেই স্থিতিশীলতা বলা যায়। স্বৈরশাসনে কখনোই স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়। একটি সরকার বেশিদিন থাকাও অস্বাভাবিক ব্যাপার। একটি সরকার বেশিদিন থাকলে অস্থিতিশীলতার বীজ বড় হতেই থাকে। সরকার পরিবর্তন হলে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, এসব কারণেই বিদেশি বিনিয়োগ আসে না। স্বাভাবিক নিয়মে সরকার পরিবর্তন হবে কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না, এটাই হচ্ছে স্থিতিশীলতা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d