বন্দরে নমুনা সংগ্রহের সময় বাড়ছে, শনিবারও খোলা
চট্টগ্রাম বন্দরে নমুনা পরীক্ষার সময় বাড়ানো হচ্ছে। দুপুর ১টার পরিবর্তে সকাল ১০টায় নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হবে। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বর্তমানে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া শনিবারও কার্যক্রম চলবে।
সোমবার (১০ জুন) সকালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) মহাপরিচালক (ডিজি) এস এম ফেরদৌস আলম এসব জানান। একইসঙ্গে সপ্তাহে একদিন চট্টগ্রামে অফিস করারও ঘোষণাও দেন তিনি। আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ‘অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে মানসম্মত পণ্যের প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে বিএসটিআই এর ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বিএসটিআই মহাপরিচালক।
তিনি বলেন. ‘চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরীক্ষণে সময়ক্ষেপণ কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে নমুনা সংগ্রহের সময় বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত করার উদ্যোগ নিচ্ছি। এখন থেকে শনিবারও বিএসটিআই চট্টগ্রাম অফিসের নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম চালু থাকবে। একই সাথে সোনালী ব্যাংকের গেটওয়ে ব্যবহার করে নমুনা পরীক্ষার ফি জমাদান এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমেও ফি জমাদান করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে সমাধানের চেষ্টা করবো।’
জনবল সংকট প্রসঙ্গে বিএসটিআই ডিজি বলেন, ‘চট্টগ্রাম অফিসে লোকবলেরও সংকট আছে। এ সংকট নিরসনে লোকবল পদায়ন করা হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে নতুন নির্মিত বিএসটিআই ভবনে আমি প্রতি সপ্তাহে একদিন করে অফিস করব।’
তিনি বলেন, ‘মানসম্মত পণ্য যদি বিদেশে রপ্তানি করতে না পারি তাহলে দেশের সুনাম যেমন নষ্ট হবে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ব্যবসায়ীরা। আবার আমদানি করা পণ্যের সাথে ভেজাল ও অসাধুতা অবলম্বন করে মানুষের স্বাস্থ্যহানি ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া যাবে না। তাই যেকোন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে মানের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’
এ সময় চিটাগং চেম্বার সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সততা নিয়ে কাজ করতে হবে। গুটি কয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের দায়ভার সকলে বহন করবে না। আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। একই সাথে ‘কস্ট অব ডুয়িং’ বিজনেস কমানোর জন্য এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে কমন টেস্টিং সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। এছাড়া ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের অংশ হিসেবে পণ্যের গুণগতমান বজায় রেখে কিভাবে বিদেশে রপ্তানি বাড়ানোর জন্য চিটাগাং চেম্বারের সাথে বিএসটিআই যৌথভাবে নলেজ শেয়ারিং ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিলে ভালো হতো।’
ক্যাব সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘বিএসটিআই জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান। এজন্য এখানকার গভর্নিং বডিতে রাখা হয়েছে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিদের। তাই আমরা ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসেবে এবং জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে বিএসটিআইয়ের ল্যাবসহ সার্বিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যেন করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের যেন চট্টগ্রাম থেকে নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় যেতে না হয়। কারণ ব্যবসায়ীদের ‘কস্ট অব ডুয়িং’ বিজনেস বেড়ে গেলে তার চাপ পড়বে ভোক্তাদের উপর।’
আলোচনায় অংশ নেন চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রব্বানী ও কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল হক খান স্বপন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার সাবেরী, বিএসপি ফুড প্রোডাক্টস লি. অজিত কুমার দাশ, এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসি’র এএসএম সোলায়মান, অরবিস ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল’র জাফর উল্লাহ, আবুল খায়ের গ্রপের জহিরুল ইসলাম।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকদের মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, আখতার উদ্দিন মাহমুদ ও ওমর মুক্তাদির, বিএসটিআই’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।