বহদ্দারহাটে আন্ডারপাস নির্মাণে প্রধান বাধা ‘ইউটিলিটি সার্ভিস লাইন’
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে প্রথম আন্ডারপাস নির্মাণ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। কর্ণফুলী গ্যাস, বিদ্যুৎ, ওয়াসা এবং টিএন্ডটি- এই চারটি সংস্থার পাইপলাইন ও ক্যাবল নির্মাণকাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জটিলতা কাটিয়ে প্রকল্পে গতি আনতে এই চার সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে চসিক। আজ সোমবার পাইপলাইন অপসারণের বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার সাথে বৈঠক করবে চসিক। অন্যদিকে, চার সংস্থার ইউটিলিটি সার্ভিস লেন দ্রুত অপসারণ করে আন্ডারপাস নির্মাণকাজের গতি আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী।
পথচারী পারাপারের সুবিধার্থে নগরীর আরাকান সড়কের নিচ দিয়ে পথচারী পারাপারের এই পথ বা আন্ডারপাসটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চসিক। বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সের সামনে একটি এবং আরাকান সড়কের উত্তর পাশে আরেকটি প্রবেশপথ থাকবে এই আন্ডারপাসের।
প্রকল্পের নথি অনুসারে, আন্ডারপাসটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটির কাজ পেয়েছে মেজবাহ এসোসিয়েটস। আন্ডারপাসটি হবে ৪১ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ মিটার প্রশস্ত। এর উচ্চতা ৪ মিটার। দুই প্রবেশমুখে একটি করে দুটি সিঁড়ি থাকবে। থাকবে একটি করে দুটি স্কেলেটরও (চলন্ত সিঁড়ি)।
আন্ডারপাসের ভেতর হকার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দু’পাশে ১০টি করে ২০টি দোকান নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি দোকানের জন্য আন্ডারপাসের ২ দশমিক ৭৫ মিটার জায়গা লাগবে। এসব দোকান বাদ দিলে মাঝখানে সাড়ে ৪ মিটার বা প্রায় ১৫ ফুট জায়গা থাকবে মানুষের হাঁটার জন্য। জলাবদ্ধতায় পানি প্রবেশরোধে আন্ডারপাসের প্রবেশমুখ হবে ক্যানোপি আকৃতির। কোন কারণে পানি প্রবেশ করলে তা নিষ্কাশনে থাকবে দুটি পাম্প। এছাড়া পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে এবং বেশ কয়েকটি এডজাস্ট ফ্যানও থাকবে ভেতরে।
আন্ডারপাসের নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট লিমিটেডের (ডিপিএম) প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, বহদ্দারহাট মোড়ে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে এক হাজারের বেশি লোক রাস্তা পারাপার করেন। কয়েকটি সড়কের সংযোগ থাকায় এ মোড়ে গাড়ির চাপও থাকে বেশি। ফলে রাস্তা পারাপারকারীদের সবসময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। মহিলা, শিশু এবং বয়স্কদের এ ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সেখানে আন্ডারপাস নির্মাণ হলে দুর্ঘটনা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপার করতে পারবেন পথচারীরা।
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশিকুল ইসলাম বলেন, আন্ডারপাস নির্মাণে সেবা সংস্থাগুলোর ইউটিলিটি সার্ভিসের লেন সরাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইউটিলিটি সার্ভিসের লেন থাকা প্রত্যেক সেবা সংস্থার সাথে কথা হয়েছে। শীঘ্রই সব সমস্যা সমাধান করে আন্ডারপাস নির্মাণকাজ এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বহদ্দারহাটের আন্ডারপাসটি হবে বাংলাদেশের প্রথম স্কেলেটরযুক্ত আন্ডারপাস। মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার সুবিধা থাকবে এখানে। প্রতিবন্ধী, শিশু এবং বয়স্কদের সুবিধার্থে স্কেলেটর দেয়া হচ্ছে। চসিকের নিজস্ব অর্থায়নে এই আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে।